বাড়ল পেট্রল-ডিজেল-অকটেনের দাম, যেদিন থেকে কার্যকর

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৩০শে এপ্রিল ২০২৪ ১০:১৩ অপরাহ্ন
বাড়ল পেট্রল-ডিজেল-অকটেনের দাম, যেদিন থেকে কার্যকর

দেশের বাজারে বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম। বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে তৃতীয়বারের মতো জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের ঘোষিত প্রজ্ঞাপনে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি এক টাকা করে বেড়েছে। একই সঙ্গে অকটেন ও পেট্রলের দাম লিটারপ্রতি ২ টাকা ৫০ পয়সা করে বাড়ানো হয়।


আগামীকাল বুধবার থেকে এ নতুন দর কার্যকর হবে।


মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে জ্বালানি তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০৭ টাকা করা হয়েছে। অকটেনের দাম ১২৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২৮ টাকা ৫০ পয়সা এবং পেট্রলের দাম ১২২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২৪ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে।


 

সর্বশেষ গত ৩১ মার্চ ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ২ টাকা ২৫ পয়সা কমিয়ে ১০৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। 


এর আগে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অস্বভাবিক বৃদ্ধিতে ভর্তুকির চাপ এড়াতে ২০২২ সালের ৫ আগস্ট ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়। পেট্রল লিটারপ্রতি ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেন লিটারপ্রতি ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকায় নির্ধারণ করে সরকার। এরপর একই মাসের ২৯ আগস্টে লিটারপ্রতি ৫ টাকা করে কমিয়ে ডিজেল ও কেরোসিন ১০৯ টাকা, পেট্রল ১২৫ টাকা এবং অকটেন ১৩০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়।


বর্তমানে জ্বালানি তেলের দর নির্ধারণ ছাড়াও আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি মাসে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। অনেকটাই একই প্রক্রিয়ায় জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করছে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ।


বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৭৫ লাখ টন। মোট চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশ বা প্রায় ৫০ লাখ টন ডিজেল ব্যবহার হয়। বাকি ২৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ হয় পেট্রল, অকটেন, কেরোসিন, জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েলসহ বিভিন্ন জ্বালানি তেলে।


ডিজেল সাধারণত কৃষি সেচে, পরিবহন ও জেনারেটরে ব্যবহার করা হয়। অকটেন ও পেট্রল বিক্রিতে সব সময় বিপিসি লাভ করেন। মূলত ডিজেল বিক্রিতেই বিপিসির লাভ ও লোকসান নির্ভর করে। 


জ্বালানি তেলের মধ্যে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেট ফুয়েল ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করে বিপিসি। আর ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।


জ্বালানি বিভাগ জানায়, প্রতিবেশী দেশ ভারত ছাড়াও উন্নত বিশ্বে প্রতি মাসেই জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করা হয়।


প্রতিবেশী দেশ ভারতের কলকাতায় বর্তমানে ডিজেল লিটারপ্রতি ৯০.৭৬ রুপি বা ১৩০ টাকা ৬৯ পয়সা এবং পেট্রল ১০৩.৯৪ রুপি বা ১৪৯ টাকা ৬৭ পয়সা বিক্রি হচ্ছে।


আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্ত হিসেবে সরকার গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি ঘোষণা করে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া চালুর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমলে দেশে কমবে আবার বাড়লে দেশের বাজারেও বাড়বে।