প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৫:৫৩
রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে জাতিসংঘের উদ্যোগে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। রোববার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান।
তিনি জানান, এই সম্মেলন রোহিঙ্গাদের জন্য একটি বড় সুযোগ হতে যাচ্ছে। কারণ এটি শুধু তাদের সমস্যার সমাধানেই নয়, বরং বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে রোহিঙ্গাদের আশা, আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন তুলে ধরার একটি স্থায়ী প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে। সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের কথা শোনানোর জন্য বাংলাদেশ সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ড. খলিলুর রহমান জানান, সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে একটি আন্তর্জাতিক অংশীজন সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এর মূল বিষয় হবে— রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা। এতে অংশ নেবেন দেশের ভেতরে থাকা কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীরা।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও বলেন, এক সময় রোহিঙ্গা ইস্যুটি প্রায় আন্তর্জাতিক আলোচনার এজেন্ডা থেকে হারিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা গত বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গিয়ে এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আহ্বান জানান। সেই আহ্বানেই সদস্য রাষ্ট্রগুলো তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়।
তার ভাষ্য অনুযায়ী, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। বিশ্বের ১০৬টি দেশ এই উদ্যোগকে স্পন্সর করেছে, যা রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সমর্থনের একটি বড় প্রমাণ। এই সমর্থন এখন বাংলাদেশকে একটি অনুকূল পরিবেশ দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এই সম্মেলনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি সমাধানমুখী পথ তৈরি হবে। বাংলাদেশ আশা করছে, এতে করে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনাসহ বহুমাত্রিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরও জোরদার হবে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও কার্যত কোনো বাস্তবসম্মত সমাধান পাওয়া যায়নি। এবার জাতিসংঘের আয়োজনে অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন করে সমাধানের দিগন্ত খুলবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ সরকার।
তিনি আরও যোগ করেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান আন্তর্জাতিক মহলের সক্রিয় ভূমিকার ওপরই নির্ভর করছে। সম্মেলনের মাধ্যমে সেই ভূমিকা বাস্তব রূপ পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।