প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৪৯
দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক পুলিশ প্রধান জাবেদ পাটোয়ারী ও ১২৩ জনকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রেখেছে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ সংক্রান্ত অভিযোগের কারণে। রোববার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, অসমাপ্ত আত্মজীবনী নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দুদকের নজরে এসেছে এবং সংস্থা ইতোমধ্যেই বিষয়টি তদন্ত করছে।
দুদক গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে। মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত সকলের অর্থনৈতিক সুবিধা ও কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং শিগগিরই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। সংস্থার নজরদারি কার্যক্রম চলমান এবং কেউ কোনো প্রভাবিত হতে পারবে না।
বইটি মূলত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত বলে দাবি করা হলেও সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসলে এই বই লিখেছেন সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী এবং তার নেতৃত্বাধীন ১২৩ সদস্যের একটি দল। বিনিময়ে তারা সরকারি পদ, নগদ অর্থ এবং ঢাকা শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে ফ্ল্যাট লাভ করেছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালে জাবেদ পাটোয়ারী নিয়োগ পান আইজিপি হিসেবে। বইটি লিখতে যে দল কাজ করেছে, তাদের প্রত্যেককে রাজধানীর ধানমন্ডি, বসুন্ধরা ও মিরপুর এলাকায় কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছে এবং নগদ এক কোটি টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। বই প্রকাশের প্রক্রিয়ায় সরাসরি তত্ত্বাবধান করেছেন শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
দুদক জানিয়েছে, গোয়েন্দা তদন্তের মাধ্যমে জড়িত ব্যক্তিদের অর্থনৈতিক সুবিধা, সম্পদ ও লেনদেন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পরই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ সংক্রান্ত তথ্য গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনগণকে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি ২০১২ সালে প্রকাশিত হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের চারটি খাতা ঘেঁটে সম্পাদনা ও সংশোধনের পর বইটি প্রকাশের দাবি করা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বইটির লেখন প্রক্রিয়া এবং আর্থিক লেনদেন নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে দুদক বলেছে, তদন্তে কোনো ধরনের প্রভাব বা রাজনৈতিক চাপ প্রতিহত করা হবে এবং যে কেউ যদি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গোয়েন্দা নজরদারি চলমান থাকায় সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে।
তদন্ত ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দুদক শিগগিরই এ বিষয়ের বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করার কথা বলেছে, যাতে প্রকাশিত তথ্যের সত্যতা যাচাই করা যায়।