প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১১:৭
রোহিঙ্গাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক অংশীজন সংলাপে অংশ নিতে কক্সবাজারে পৌঁছেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে তিনি কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
এর আগে রোববার (২৪ আগস্ট) রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান ও সুস্পষ্ট সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে কক্সবাজারে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়। ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শীর্ষক সম্মেলনটি রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভের কার্যালয় এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত।
কক্সবাজারের হোটেল বে ওয়াচে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনটি পাঁচটি থিম্যাটিক অধিবেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এগুলো হলো: মানবিক সহায়তা ও তহবিল সংকট, রাখাইন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি, প্রত্যাবাসনের জন্য আস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং টেকসই ও সময়োপযোগী সমাধানের দীর্ঘমেয়াদি কৌশল।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন। এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম (বীর প্রতীক), রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক রানা ফ্লাওয়ার্স, মিয়ানমার বিষয়ক স্বাধীন তদন্ত মেকানিজমের প্রধান নিকোলাস কুমজিয়ান, মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষ দূত টমাস এইচ. অ্যান্ড্রুজ এবং জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজু উপস্থিত থাকবেন।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের সহিংসতার কারণে রোহিঙ্গাদের গণহারে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার ৮ বছর পূর্তির সময় এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক সহায়তা ক্রমশ কমছে এবং মিয়ানমারে সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সম্প্রতি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন উল্লেখ করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি মূল ক্ষেত্রে কাজ করছে। এগুলো হলো: অব্যাহত বিদেশি সহায়তা নিশ্চিত করা, বৈশ্বিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা সংকটকে দৃশ্যমান রাখা এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের পথ সুগম করা।
সংলাপের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান, মানবিক সহায়তা ও আস্থা পুনর্গঠন নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা আরও জোরদার হবে। আন্তর্জাতিক অংশীজনরা আশা প্রকাশ করেছেন, এই সংলাপ রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত করার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।
সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং সীমিত আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রেক্ষাপটে সংলাপের আলোচনায় রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন, নাগরিক অধিকার এবং নিরাপত্তা প্রধান বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে। অংশগ্রহণকারীরা টেকসই ও মানবিক সমাধান আনার জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।