কর্মকর্তাদের ওপর ক্ষুদ্ধ দুদক চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৯ই জানুয়ারী ২০২০ ০৯:৩৫ অপরাহ্ন
কর্মকর্তাদের ওপর ক্ষুদ্ধ দুদক চেয়ারম্যান

অনুসন্ধানে বিলম্ব ও ত্রুটিপূর্ণ প্রতিবেদন উপস্থাপন করায় দুদকের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে পরিচালকসহ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সব কর্মকর্তাদের ওপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংস্থার চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতের সভাপতিত্বে কমিশনের সমন্বয় সভায় আকস্মিক উপস্থিত হয়ে দুদক চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি ব্যথিত, ক্ষুব্ধ এবং দুঃখিত। আপনারা কী নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন? আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করার কারণেই নির্ধারিত সময়ে অভিযোগের অনুসন্ধান ও তদন্ত শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। কীভাবে ত্রুটিপূর্ণ প্রতিবেদন কমিশনে উপস্থাপিত হয়? এতে দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মনে রাখবেন দুদক একটি গণপ্রতিষ্ঠান। 

তিনি আরও বলেন, জনগণের কাছে দুদকেরও জবাবদিহিতা রয়েছে। তাই আপনাদেরও জবাবদিহিতা করতে হবে। অনুসন্ধান ও তদন্তে টাইমলাইন না মানার জন্য রেকর্ডপত্র সময়ম তো না পাওয়ার বিষয়টি আপনার বলে থাকেন। কে রেকর্ডপত্র দেয় না? যে বা যারা অনুসন্ধান বা তদন্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রেকর্ডপত্র ইচ্ছাকৃতভাবে সরবরাহ করছেন না, তাদের বিরুদ্ধে কেন দুদক আইন, ২০০৪ এর ১৯(৩) ধারায় মামলা হচ্ছে না?

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে যারা দুদকের অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্য সরবরাহ করছেন না, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দুদক আইন অনুযায়ী মামলা করতে হবে। আপনারা আইনি দায়িত্ব পালন করবেন। একটিও বেআইনি কাজ করতে পারবেন না। আইনি দায়িত্ব পালন না করে বসে থাকবেন, এটা কমিশন মেনে নেবে না। এভাবে বেআইনি যুক্তির মাধ্যমে অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্তে টাইমলাইন না মানার সংস্কৃতি সহ্য করা হবে না। 

তিনি বলেন, দেশের জনগণ মনে করে, সর্বত্রই দুর্নীতি রয়েছে। তাই দুদকের প্রতি তাদের প্রত্যাশা আকাশচুম্বী। তাদের চাহিদার তুলনায় কমিশনের যোগান তো নগণ্য। এর দায় কে নেবে? আপনাদেরই নিতে হবে। আপনাদের পদোন্নতি, দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ সবই তো দেয়া হচ্ছে। এরপরও আপনারা কেন নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন না। বছরের শুরুতেই সতর্ক করছি। গুণে গুণে হিসাব নেয়া হবে। কেউ ব্যর্থ হলে জবাবদিহি করতে হবে এবং শাস্তি পেতে হবে।

ফাইনাল রিপোর্টের বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক মামলা করার পর, সেই মামলায় তো ফাইনাল রিপোর্ট মিথ্যা হতে পারে না? এ জাতীয় ঘটনা কীভাবে কমিশনে উপস্থাপিত হয়? তাহলে আপনারা কী দুদক আইনের ২৮ ধারা সম্পর্কে সম্যক ধারণাও রাখেন না? কেউ যদি মিথ্যা জেনে বা তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত না হয়ে তথ্য দিয়ে কমিশনে মামলার সুপারিশ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৮(গ) ধারায় মামলা হচ্ছে না কেন? আজ থেকে এ জাতীয় মিথ্যা মামলা দায়েরকারী তিনি যেই হোন না কেন, তার বিরুদ্ধেও আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ইনিউজ ৭১/এম.আর