সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নাটোরের পাঁচ শ্রমিকের বাড়িতে চলছে মাতম। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) ভোরে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার রামারচর এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে ট্রাক-লেগুনা মুখোমুখি সংঘর্ষে তারা নিহত হন।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সকালে মরদেহ নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছালে হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে পুরো এলাকা। এদিকে ঘাতক ট্রাকচালকের বিচার দাবি করেছে এলাকাবাসী।
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার বাশবাড়িয়া এলাকার আব্দুল হালিম। বুধবার সন্ধ্যায় স্ত্রী ফাজিয়াকে কল দিয়ে বাড়িতে ফিরছেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বাড়িতে আসে তার মরদেহ। স্বামীর লাশ দেখে শোকে পাথর হয়ে পড়েছেন ফাজিয়া। কিছুক্ষণ পরপর সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ছেন তিনি। দুই মেয়ে ও এক ছেলের ভবিষ্যতের চিন্তায় মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন এই গৃহবধূ।
আব্দুল হালিমের বড় মেয়ে চৈতি জানান, তিনি তার বাবাকে এলাকার বাইরে গিয়ে কাজ করতে বারণ করেছিলেন। কান্নারত অবস্থায় তিনি বলেন, ‘অভাবের কারণে আজ বাবাকে হারাতে হলো।’
সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় হালিমের সঙ্গে নিহত হন মকবুল। হালিমের তিন বাড়ি পরেই তার বাড়ি। দুপুর ১২টার দিকে মকবুলের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে পরিবারের সদস্যদের আজাহারিতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
নিহত মকবুলের মা জবুরা বেগম জানান, গত ১৫ দিন ধরে গাজীপুরে ধান কাটার কাজ করছিল তার দুই ছেলে। বড় ছেলে মাইনুল সেখানে থেকে গেলেও মকবুল বাড়িতে ফিরছিল। কিন্তু সে ফিরল লাশ হয়ে।
মকবুলের স্ত্রী তানজিলা জানান, অভাবের তাড়নায় গাজীপুরে ধান কাটতে গিয়েছিলেন তার স্বামী। এখন দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে কীভাবে সংসার চলবে তার।
আব্দুল হালিম ও মকবুলের পাশপাশি বাগাতিপাড়া উপজেলার পাকা এলাকার মকবুল হোসেন ও হায়দার আলী এবং গুরুদাসপুর উপজেলার জুমাইগর হায়দার নিহত হন।
এদিকে এ ঘটনায় ঘটনায় ট্রাকচালকের বিচার দাবি করেছেন এলাকাবাসী। পাশাপাশি দিন মজুর পরিবারগুলোকে সহায়তার জন্য সরকারের কাছে দাবি করেন তারা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।