‘সাহায্য চাই না, মহারশি নদীতে বেড়িবাঁধ চাই’

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: সোমবার ২০শে জুন ২০২২ ০৬:০৪ অপরাহ্ন
‘সাহায্য চাই না, মহারশি নদীতে বেড়িবাঁধ চাই’

‘পাহাড়ি ঢলে তিল তিল করে গড়ে তোলা খামারটা আমার চোখের সামনে ভেঙে ভেসে গেলো। এতে  আমার প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হইছে। আমি এই ক্ষতিপূরণ চাই না, কোনো সাহায্য চাই না, আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও এই মহারশি নদীতে একটা স্থায়ী বেড়িবাঁধ চাই। এই বেড়িবাঁধ না হলে, আমাদের স্থায়ী সমস্যার সমাধান কোনোদিনও হবে না। সরকারের কাছে অনুরোধ করি, আমাদের এই নদীর দুই পাড়ে বেড়িবাঁধ করে দেন।’


এ প্রতিবেদকের কাছে আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ব্রিজপাড় এলাকার বেনিয়ামিন। গত ১৬ জুন (বৃহস্পতিবার) রাতের ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে সৃষ্ট বন্যায় শুক্রবার সকালে প্রবল ¯্রােতে মহারশি নদীর রামেরকুড়া এলাকার তীর ভেঙে তার বসতভিটা ও চারটি মুরগির খামার ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। মুরগির খামারে জাতের মুরগি, ডিম ও ঘর, আসবাবসহ তার মোট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ টাকা।


ঠিক একইভাবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে রামেরকুড়া এলাকার লোকমান বলেন, ‘এবারের দুই দফায় বন্যায় আমার শেষ সম্বল ঘরটাও নিয়ে গেলো সর্বনাশা মহারশি। এই নদী প্রতি বছরই ভাঙে। কোনো টেকসই বাঁধ না থাকার কারণে দুই পাড় ভেঙে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়; ঘর বাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এই ক্ষতি থেকে বাঁচতে আমাদের এই নদীর তীরে স্থায়ী বাঁধের কোনো বিকল্প নেই।’


এবারের বন্যায় ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের রামেরকুড়া গ্রাম। এই গ্রামে সাত স্থানে ভেঙে গেছে বাঁধ। ব্রিজপাড় সংলগ্ন এই অংশে ভাঙনের ফলে ঝিনাইগাতী সদর বাজার রক্ষা পেলেও ধ্বংসযজ্ঞ চলে এই এলাকায়। শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুরে রামেরকুড়া বাঁধের সঙ্গে চার বাড়ি ও দুটি মুরগির খামার ভেসে গেছে। সেইসঙ্গে ওই গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ির মানুষ পানিবন্দি হয়ে আটকে পড়েন।


ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. জাহিদুল হক মনির বলেন, এই বাঁধটি ঝিনাইগাতীবাসীর প্রাণের দাবি। এই নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো প্রতি বছর প্লাবিত হয়। এই তীর ভেঙেই পুরো ঝিনাইগাতীতে পানি প্রবেশ করে। এখানে একটি স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরী । 


জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে বলেন, ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে কথা হয়েছে; আমি একটি চিঠিও পাঠিয়েছি। আশা করছি এ বছরই এর স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব।