পরীক্ষা চলাকালেই পরীক্ষার্থীদের পিটালেন কেন্দ্র কর্মকর্তা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
এরফান হোছাইন. জেলা প্রতিনিধি (কক্সবাজার)
প্রকাশিত: শনিবার ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:৫২ অপরাহ্ন
পরীক্ষা চলাকালেই পরীক্ষার্থীদের পিটালেন কেন্দ্র কর্মকর্তা!

কুমিল্লার চান্দিনায় পরীক্ষা চলাকালে হলের ভিতরে দাখিল পরীক্ষার্থীদের পিটিয়েছেন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরীক্ষার্থীদের পিটিয়ে ৩টি স্কেল ভাঙার অভিযোগ উঠেছে।


এ ঘটনায় পরীক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দীনকে ওই কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহার করা হয়।


এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ঢাকা’র অধীনে অনুষ্ঠিত দাখিল পরীক্ষার প্রথম দিনে চান্দিনা আল-আমিন ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা পরীক্ষা কেন্দ্রের ০৯ ও ১০ নাম্বার কক্ষে ওই ঘটনা ঘটে। 

কোরআন মাজীদ বিষয়ের পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী প্রোগ্রামার মো. সালাউদ্দীন ওই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটান।


সরেজমিনে শনিবার গণিত পরীক্ষার পর চান্দিনা আল-আমিন ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে ১১ জন দাখিল পরীক্ষার্থীকে প্রহারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলো-চান্দিনা আল-আমিন ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার ৮ জন, উপজেলার আবেদা নূর ফাযিল মাদ্রাসার ৩ জন বিজ্ঞান ও সাধারণ বিভাগের ছাত্র। তারা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তারা কেন্দ্র সচিব বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা জানান, ‘কোরআন মাজীদ বিষয়ে এমসিকিউ অংশের পরীক্ষা চলাকালে ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) এ সেট কোড এর বৃত্ত ভরাট না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দীন আমাদের স্কেল দিয়ে পিটিয়েছেন।’ 


পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অভিযোগ করেন-‘ওই ঘটনার পর তাদের সন্তানরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। অনেকেই ঠিকমত পরীক্ষা দিতে পারেনি।’


এ ব্যাপারে ওই কেন্দ্রের ৯ নাম্বার কক্ষের প্রত্যবেক্ষক শিক্ষিকা মোসা. রুজিনা আক্তার জানান, ‘এমসিকিউ পরীক্ষার সময় ২০ মিনিট। ১৫ মিনিট অতিবাহিত হলেও কোন পরীক্ষার্থী সেট কোড ভরাট করেনি। এ বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরীক্ষার্থীদের নির্দেশ দিলে তারা হট্টগোল করে। এক পর্যায়ে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে প্রহার করেন।’


এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী প্রোগ্রামার মো. সালাউদ্দীন বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কোন পরীক্ষার্থীকে পিটানোর ঘটনা ঘটেনি। সেট কোড ভরাট না করায় আমি শুধুমাত্র ধমক দিয়েছি। প্রত্যাহারের বিষয় সম্পর্কে তিনি বলেন-সেটিও আমার জানা নেই, ইউএনও মহোদয় আমাকে তার সাথে থাকার জন্য বলেছেন। আমি শনিবার ইউএনও’র স্যারে সাথে ছিলাম। 


এ ঘটনায় চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাপস শীল জানান, ‘মাদ্রাসার কেন্দ্র সচিব বিষয়টি আমাকে অবহিত করেছেন। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সরিয়ে অন্য একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’