ভূঞাপুরে ভাঙন কবলিত এলাকাবাসীর সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুয়াদ হাসান রঞ্জু, উপজেলা প্রতিনিধি, ভূঞাপুর- টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৪শে আগস্ট ২০২৩ ০৮:১৩ অপরাহ্ন
ভূঞাপুরে ভাঙন কবলিত এলাকাবাসীর সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন

চলতি বছরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের যমুনা পূর্ব পাড়ের চিতুলিয়া পাড়া, মাটিকাটা ও পাটিতাপাড়া সহ কয়েকটি গ্রামে দফায় দফায় ভাঙন দেখা দেয়। বর্তমান সময়ে এসব এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে আবারো ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে বসতভিটা, ফসলি জমিসহ নানা স্থাপনা। হুমকির মুখে রয়েছে ঈদগাহ মাঠ, কবরস্থান, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ অসংখ্য স্থাপনা। ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় স্থায়ী বাঁধের দাবিতে মানববন্ধনসহ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে নদী ভাঙন প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটি। 


বৃহস্পতিবার (২৪ আগষ্ট) সকাল ১১টা  থেকে ১টা পর্যন্ত টানা দুই ঘন্টা ভূঞাপুর-বঙ্গবন্ধু সেতু সড়কের মাটিকাটা মোড় এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করে তারা। বিক্ষোভে ভাঙন কবলিত এলাকার শত শত নারী-পুরুষ, স্কুল, কলেজ সহ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা  অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। এসময় অবরোধের কারণে সড়কের উভয় পাশে যানবাহনের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়। এর ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।



ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ বেলাল হোসেন এবং সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফাহিমা বিনতে আখতার ঘটনাস্থলে গিয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন।


চিতুলীয়াপাড়া গ্রামের বসতভিটা ও ফসলি জমি হারানো সোহরাব আলী বলেন, যমুনার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনে আমার বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। আমি পরিবার নিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।


একই গ্রামের শাহ জামাল বলেন, নদী ভাঙনের কারণে এ পর্যন্ত আমি কয়েকবার আমার বসতভিটা হারিয়েছি। এবারের ভাঙনেও আমার বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন আর আমার বসতি গড়ে তোলার কোন জমিজমা নাই। পরিবার নিয়ে কোথায় যাব ভেবে পাচ্ছি না।


কোনাবাড়ি মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মিন্টু মিয়া বলেন- গত কয়েক বছরে আমাদের এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। চলতি বছরেও ইতিমধ্যে প্রায় অর্ধ শতাধিক বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের মাদ্রাসায় আস্তে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জিওব্যাগ ফেলা না হলে ও স্থায়ী বাঁধ না দিলে স্কুল মাদ্রাসা সহ কয়েকটি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।


এবিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)  মোঃ বেলাল হোসেন বলেন, ভাঙন ঠেকাতে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। এর আগেও জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। এছাড়াও ভাঙন কবলিত এলাকায় যাতে আরও দ্রুত জিওব্যাগ ফেলা যায় সে ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। নদী ভাঙনে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছে তাদের তালিকা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে।



জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন- ভূঞাপুরের যমুনা পূর্ব পাড়ে ভাঙন রোধে কয়েক দফায়  জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে কাজ করা হয়েছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য আমরা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। অনুমতি পেলেই আমরা কাজ শুরু করবো।



ক্যাপশন:ভূঞাপুর-বঙ্গবন্ধু সেতু সড়কের মাটিকাটা মোড়ে স্থায়ী বাঁধের দাবিতে ভাঙন কবলিত এলাকাবাসীর সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন।