বৌ আনতে গিয়ে শ্রীঘরে ঠাঁই হলো বরের !

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় বাল্যবিবাহ করতে গিয়ে সাব্বির হোসেন (২৪) নামে এক বরের ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তেঁতুলিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার রাতে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দর্জিপাড়া গ্রামে বিয়ের আসরে অভিযান পরিচালনা করে দণ্ডাদেশ প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তেতুঁলিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)মাহবুবুল হাসান।

দণ্ডপ্রাপ্ত বর সাব্বির হোসেনের বাড়ি উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়া এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার রাতে দর্জিপাড়া গ্রামের জামাল উদ্দীনের নাবালিকা (১৭) মেয়ের সঙ্গে পারিবারিকভাবে জমকালো আয়োজনে বিয়ে হচ্ছিল উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মজিবর রহমানের ছেলে সাব্বিরের। পরে বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসন তেতুঁলিয়া মডেল থানা পুলিশ ও ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন।

তবে অভিযানের খবর পেয়ে কনের বাবা ও পরিবারের সদস্যরাসহ বরযাত্রীরা পালিয়ে যান। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক কনের উপস্থিতিতে কনেপক্ষের কয়েকজনের কাছে কনের বয়সসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে জানতে চাইলে আদালতকে সহযোগিতা না করে তথ্য গোপন করেন। পরে কনের সহযোগিতায় জন্মনিবন্ধনসহ প্রয়োজনীয় কাগজ যাচাই করলে বিবাহের জন্য কনের অপ্রাপ্ত বয়স পাওয়ায় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর ৭ (১) ধারায় বর সাব্বিরকে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তেতুঁলিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)মাহবুবুল হাসান। পরে রাতেই বর সাব্বিরকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বরকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এ সময় তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ করিম সিদ্দিকী, তেতুঁলিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনছারুজ্জামানসহ থানা পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিলেন।

আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তেতুঁলিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুল হাসান বলেন, সরকারি আইন অনুযায়ী মেয়েদের ১৮ বয়সের নিচে বিয়ে দেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে রাতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে বর সাব্বিরকে ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ প্রদান করে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। ভবিষ্যতে বাল্যবিবাহ নিরোধ করতে আমাদের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।