ঝালকাঠির নলছিটির শহীদ সেলিম তালুকদারের নবজাতক কন্যা ও স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সোমবার দুপুরে ঝালকাঠি শহরের একটি ক্লিনিকে গিয়ে এনসিপির নেতারা তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। শহীদ পরিবারের প্রতি সংহতি জানিয়ে নেতারা নবজাতককে কোলে তুলে নিয়ে স্নেহ ভালোবাসা প্রকাশ করেন।
এ সময় এনসিপির ঝালকাঠি জেলা সংগঠক মো. শাহীন আলম, আব্দুল্লাহ ওমর, আবু হানিফ, নাজমুল হাসান টিটু, মুফতি মাসুম বিল্লাহ, মো. মাহাবুব মিয়াসহ স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এনসিপির পক্ষ থেকে শহীদ সেলিম তালুকদারের স্ত্রী সুমী আক্তারের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেওয়া হয়। নেতারা বলেন, শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে তারা সব সময় শহীদ পরিবারের পাশে থাকবেন।
ঝালকাঠি জেলা সংগঠক মো. শাহীন আলম বলেন, "আমরা এনসিপির নেতা-কর্মীরা বিপ্লবীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছি। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে বৈষম্য ও দুঃখ-কষ্ট থাকবে না। শহীদ সেলিমের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব।" তিনি আরও জানান, কেন্দ্রের নির্দেশে এনসিপি সারা দেশে তাদের কার্যক্রম বিস্তৃত করবে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহীদ হন সেলিম তালুকদার। তিনি ঢাকায় আন্দোলনরত অবস্থায় নিহত হন। তখন তার স্ত্রী সুমী আক্তার আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গত ৮ মার্চ তিনি ঝালকাঠির একটি ক্লিনিকে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এই নবজাতক তার বাবাকে দেখার আগেই তাকে হারিয়েছে।
শহীদ পরিবারের প্রতি সামাজিক সংহতির এই দৃষ্টান্ত সমাজে ইতিবাচক বার্তা দেবে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। এনসিপির এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হবে বলে নেতারা আশ্বাস দেন। শহীদ পরিবারের প্রতি সম্মান জানিয়ে তারা বলেন, বিপ্লবীদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া হবে না।
শহীদ সেলিম তালুকদার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন সাহসী যোদ্ধা ছিলেন। তিনি দেশ ও মানুষের অধিকারের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তার এই আত্মত্যাগ আজও আন্দোলনকারী তরুণদের অনুপ্রেরণা জোগায়। এনসিপির নেতারা বলেন, তারা শহীদ পরিবারের পাশে থাকবেন এবং ভবিষ্যতেও যেকোনো সহায়তা প্রদান করবেন।
শহীদ পরিবারের সদস্যরা এনসিপির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। সেলিম তালুকদারের স্ত্রী সুমী আক্তার বলেন, "আমার স্বামী দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, আজ আমরা অসহায় নই, অনেকেই আমাদের পাশে রয়েছেন।" তিনি নবজাতককে সুস্থভাবে বড় করতে সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির এ সহায়তা শহীদ পরিবারের প্রতি সামাজিক সংহতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এনসিপির নেতারা জানান, তারা শহীদদের আত্মত্যাগের মর্যাদা অটুট রাখতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাবেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।