বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিল তার জীবনের অন্যতম চ্যালেঞ্জপূর্ণ অভিযান শুরু করেছেন, যা শুধু তার নিজের জন্য নয়, পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দাঁড়াবে। শাকিল, যিনি ‘বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং এন্ড ট্রেকিং ক্লাব’ এর সদস্য, বাংলাদেশের কক্সবাজারের ইনানী সী বিচ থেকে শুরু করে নেপালের মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় ৯০ দিনের মধ্যে পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছেন।
ইকরামুল হাসান শাকিল ২০১৪ সালে ভারতের নেহরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং থেকে পর্বতারোহণের মৌলিক প্রশিক্ষণ নেন এবং ২০১৮ সালে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করেন। তার অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা তাকে বিশ্বের বিভিন্ন উঁচু পর্বতে চূড়ায় পৌঁছানোর সুযোগ দিয়েছে। তার উল্লেখযোগ্য অভিযানের মধ্যে রয়েছে ২০১৫ সালে নেপালের মাউন্ট কেয়াজো-রি, ২০১৭ সালে নেপালের লারকে পিক, ২০১৮ সালে ভারতের দ্রৌপদি-কা-ডান্ডা-২, ২০১৯ সালে নেপালের হিমলুং হিমাল এবং আরও অনেকগুলি।
এবার, শাকিল তার জীবনের সবচেয়ে বড় অভিযান শুরু করেছেন, ‘সী টু সামিট’। ১৩৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথ তিনি ৯০ দিনে হেঁটে অতিক্রম করবেন। তার এই অভিযানের লক্ষ্য শুধুমাত্র পর্বত জয়ী হওয়া নয়, বরং পৃথিবীকে আরও সবুজ এবং টেকসই করতে সচেতনতা সৃষ্টি করা। শাকিল এই অভিযানের মাধ্যমে যুব সমাজের মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্লাস্টিক দূষণ, কার্বন নির্গমন হ্রাস, এবং পরিবেশবান্ধব জীবনযাত্রার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করবেন।
আজ, শনিবার দুপুর ২টার সময় দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা অতিক্রম করার সময় তিনি বলেন, “আমার অভিযান শুধু একটি পর্বতারোহণ নয়, এটি পৃথিবীকে আরও ভালো এবং সবুজ করার লক্ষ্যে এক ধরনের আন্দোলন। আমি চাই যুব সমাজ প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশবান্ধব জীবনযাত্রার প্রতি মনোযোগ দিক।”
তিনি আরও বলেন, “আগামী ২৭ তারিখে আমি বাংলাদেশের শেষ বর্ডার বাংলাবান্ধায় পৌঁছাবো এবং ২৮ তারিখে ভারত হয়ে নেপালে প্রবেশ করব। ১৩৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে আমি মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা করবো।”
এদিকে, তার এই অসাধারণ উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়ে শাকিলের টাইটেল স্পনসর বলেন, “শাকিলের এই অভিযান শুধুমাত্র তার জন্য নয়, বরং মানবতা এবং পরিবেশ রক্ষার জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তার যাত্রা আমাদের মধ্যে একটি সবুজ এবং টেকসই ভবিষ্যতের জন্য কাজ করার আগ্রহ সৃষ্টি করবে।”
এ অভিযান, যা তিনটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ার লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয়েছে, সবার জন্য একটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। শাকিলের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মানুষ এবং প্রতিষ্ঠানগুলো পরিবেশবান্ধব কার্যক্রমে আরও উৎসাহিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।