দেবীদ্বারে তিল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
শফিউল আলম রাজীব, উপজেলা প্রতিনিধি - দেবীদ্বার, কুমিল্লা
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৯ই জুন ২০২২ ০৮:১৬ অপরাহ্ন
দেবীদ্বারে তিল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

কম শ্রম ও কম খরচে সবধরনের মাটিতে উৎপাদন হওয়ায় তিল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে যাবে তিল চাষীদের ভাগ্য। 

ভোজ্য তেলের সংকট নিরসনে তিল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। দেবীদ্বারের কিছু সংখ্যক কৃষক তিল চাষকে ভাগ্য পরিবর্তনে লক্ষ্য হিসেবে নিয়েছেন। তাদের মাঠগুলোতে সবুজ তিল ক্ষেতের দৃষ্টিনন্দন হাঁসি পথিকেরও মন কাড়ছে। তিল থেকে তৈরী তেল দিয়ে রাঁধুনী তার সুস্বাধু পিঠা-পুলিসহ নানা খাবার রান্নার বাহারী আয়োজন করে আসছেন। 


খরচ কম আর আর্থিকভাবে লাভবান হতে তিল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাটির জৈব ঘাটতি পূরণেও লাভজনক হওয়ায় এর চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাজার ব্যবস্থাপনা সুবিধা পেলে কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা হতে পারে তিল। মাঝে এ শস্য চাষ অনেকটা হারিয়ে গিয়েছিল। গত কয়েক বছর ধরে ফের বাড়ছে।


উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে তিল চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমন আবাদের পর ক্ষেত যখন খালি থাকে তখন তিল চাষ করা যায়। এতে ধানের কোনো ক্ষতি হয় না। তিল চাষে সার ও কীটনাশক লাগে না বললেই চলে। তাই রক্ষণাবেক্ষণে কোনো খরচ হয় না। শীত-বর্ষাসহ সকল ঋতুতেই তিল চাষ করা যায়। 


আশানপুর গ্রামের তিল চাষী সফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, তিন বছর ধরে তিল চাষ করছেন। তার দেখা দেখি ওই গ্রামের অনেকে তা চাষ করছেন। এটি চাষে জমির উর্বরা শক্তি বাড়ে। রাসায়নিক সার ও জমি নিড়ানির দরকার হয় না। সামান্য শ্রম ও অল্প খরচে প্রতি বিঘায় পাঁচ থেকে ছয় মণ ফলন হয় । 


উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, ভোজ্য তেল সোয়াবিনের বিকল্প হিসেবে তিল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে আমরা কৃষকদের মধ্যে প্রনোদনাসহ উৎসাহ বাড়াচ্ছি। চলতি মৌসুমে ১০ হেক্টর জমিতে তিল চাষের লক্ষমাত্রা নিয়েছি। এর মধ্যে উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের আসানপুর ব্লকের কৃষক মোঃ সফিকুল ইসলাম ও জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বেগমাবাদ ব্লকের চরবাকর গ্রামের কৃষক মোঃ মোসলেম উদ্দিনের মাধ্যমে এক একর করে দু’টি ‘কৃষি প্রদর্শনী করা হয়। কৃষি বিভাগ থেকে প্রতি একর তিল চাষের জন্য বারি ৩-৪ জাতের  ৩ কেজি বীজ, ৮০ কেজি ইউরিয়া, ৭৪ টিএসপি, ৪৫ কেজি এমওডি ৯ কেজি জিংক, ৬৪ কেজি জিপসাম সার, কীটনাশক, অটোষ্টিন, ডাসবান  ও একটি প্রদর্শনী খামারের সাইন বোর্ড দেয়া হয়েছে। জমি, শ্রম ও ফসলের মালিক ওই দুই কৃষকই হবেন।


উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রৌফ বলেন, ভোজ্যতেল সোয়াবিনের ঘাটতি পুরনে বিকল্প হিসেবে তিল, সরিষা এবং সূর্য্যমূখী চাষে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি বেশী। সোয়াবিনের চেয়ে তিল, সরিষা, সুর্যমূখী তৈলের পুষ্টিগুনও বেশী। এসব আবাদে কৃষক তার নিজ চাহিদা পুরনের পরও বাজারজাত করতে পারেন।