পদ্মায় মাথাবিহীন লাশ,: প্রেমে জড়িয়ে হত্যাকাণ্ড, প্রধান আসামি গ্রেফতার

সোমবার (২৮ এপ্রিল) মামলার পরদিন মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয় প্রধান আসামি সেতুকে। তিনি চর বরাট এলাকার মৃত সাইফুর রহমানের মেয়ে। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারের পর সেতু আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং হত্যাকাণ্ডে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। অপরদিকে গ্রেফতার হওয়া সোহাগ এখনও অপরাধের দায় স্বীকার করেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে গোয়ালন্দ উপজেলার চর বরাট এলাকার পদ্মা নদীর ক্যানাল থেকে মাথাবিহীন একটি যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের কোমরে রশি বাঁধা ছিল এবং লোহার গ্রাফি দিয়ে নদীতে ডুবানো হয়। নিহতের যৌনাঙ্গ কাটা ছিল এবং পেট চিরে নাড়িভুঁড়ি বের করে ফেলা হয়। সন্ধ্যায় পরিবারের দাবি অনুযায়ী লাশটি জিহাদ সরদারের বলে শনাক্ত করে দাফন করা হয়। পোশাক ও শরীরের কিছু চিহ্ন দেখে পরিবার তাকে শনাক্ত করলেও পুলিশ পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠিয়েছে।

নিহত জিহাদ সরদার (৩০) গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের কাসরন্দ গ্রামের শহিদ সরদারের ছেলে। তিনি ঢাকায় একটি জাহাজ মেরামতের কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কাউকে না জানিয়ে হঠাৎ বাড়ি ফেরেন। রাত ৮টার দিকে খাওয়া শেষে চাচাতো ভাই সোহাগ সরদারের সঙ্গে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন তার বাবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

তদন্তে উঠে এসেছে, জিহাদের সঙ্গে বিবাহবর্হিভূত সম্পর্ক ছিল অভিযুক্ত সেতুর। কিন্তু জিহাদের অনুপস্থিতিতে সেতুর সঙ্গে হৃদয় ও সোহাগের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্ক থেকে সৃষ্টি হওয়া বিরোধই এই হত্যার কারণ হতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। তদন্তের অংশ হিসেবে দৌলতদিয়া নৌ ফাঁড়ি পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং এখনও জিহাদের কাটা মাথা উদ্ধার করতে পারেনি। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, “লাশ শনাক্তকরণে ডিএনএ রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। সেতু জবানবন্দি দিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। সোহাগকেও গ্রেফতার করা হয়েছে, তবে তিনি দায় অস্বীকার করেছেন। হত্যার পেছনে সম্পর্কজনিত বিরোধ কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”