জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা সদরে দেশের উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ এবং প্রাচীন গরুর হাটে জমে উঠেছে কোরবানি উপলক্ষে গরু, মহিষ ও ছাগলের কেনাবেচা। সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার বসা এই হাটে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলা থেকে পশু ব্যবসায়ীরা এসে ভিড় করেন। হাজারো গরু-মহিষের সমাগম আর কোটি কোটি টাকার বেচাকেনায় হাটের প্রাণচাঞ্চল্য এখন তুঙ্গে।
টাঙ্গাইল থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী আনিছুর রহমান আনিছ জানান, তিনি এ হাট থেকে ২ ট্রাকে মোট ১৮টি গরু কিনেছেন এবং আরও গরু কেনার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, “পশুর সংখ্যা অনেক, ক্রেতা-বিক্রেতাও প্রচুর, কিন্তু হাটের জায়গা তুলনামূলকভাবে ছোট। সরকার এ হাট থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে, তাই জায়গা বাড়ানো উচিত।”
এ হাটের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন কুসুম্বা ইউনিয়নের মঠপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী নিলকান্ত বর্মন। তিনি বলেন, “দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বাবা-দাদার সঙ্গে এই হাটে আসছি। এখন গরু-মহিষের কেনাবেচা অনেক বেড়েছে, কিন্তু জায়গার কোনো উন্নয়ন হয়নি।”
বগুড়ার সোনাতলা থেকে আসা ব্যবসায়ী মোকলেছার জানান, “আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে এই হাটে গরু কিনতে আসছি। এবার দেশীয় খামারের ২ ট্রাক গরু কিনেছি। ভারতীয় গরু নেই, কিন্তু দাম তুলনামূলক কম। অন্য হাটের তুলনায় এখানে ছাপা খরচও কম—প্রতি গরুতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা কম নেয়।”
হাটে শুধু গরু-মহিষ নয়, ছাগলের বেচাকেনাও হচ্ছে। ছাগল বিক্রেতা ফয়জুল বলেন, “দুটি খাসি এনেছি, ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে চাইছি। ঈদ সামনে, ছেলে-মেয়ের জন্য কিছু কিনতে হবে।”
এদিকে ফেচকাঘাট এলাকার ক্রেতা আলম হোসেন বলেন, “৮০ হাজার টাকায় একটি কোরবানি গরু কিনেছি। গত বছরের তুলনায় ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা কমে গরু পেয়েছি, এতে আমি খুব খুশি।”
ব্যবসায়ীরা হাটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও সন্তুষ্ট। কেউই ছিনতাই বা পকেটমারের শিকার হননি বলে জানিয়েছেন।
তবে হাটের অপ্রতুল জায়গা নিয়ে সবার মধ্যেই উদ্বেগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশের বৃহৎ হাটটিকে আরও আধুনিক ও সুবিধাসম্পন্ন করে গড়ে তোলা হোক।