বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে টানা পাঁচদিন ধরে চলছে অনির্দিষ্টকালের শাটডাউন। পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, আধুনিক ল্যাব সুবিধা এবং একাডেমিক পরিবেশের উন্নয়নসহ সাত দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) আন্দোলনের পঞ্চম দিনে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে বিক্ষোভ আরও জোরদার করে তোলে।
‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে’ আয়োজিত এ আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন শত শত শিক্ষার্থী। তাদের দাবি, দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে তারা শিক্ষকের অভাব, ল্যাব ও অবকাঠামোর বেহাল দশা এবং একাডেমিক বিশৃঙ্খলার শিকার হয়ে আসছেন। তারা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে বস্ত্র অধিদপ্তর আশ্বাস দিলেও বাস্তব কোনো পরিবর্তন হয়নি। এবার তারা আশ্বাস নয়, দেখতে চান দৃশ্যমান ও স্থায়ী সমাধান।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের কুশপুত্তলিকা দাহ করে প্রতীকী প্রতিবাদ জানায়। তাদের অভিযোগ, গত বছর শিক্ষক নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এমনকি ২২ জুলাই অনুষ্ঠিত বুটেক্স, বস্ত্র অধিদপ্তর ও অধিভুক্ত কলেজের ত্রিপক্ষীয় সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নেও কোনো অগ্রগতি নেই।
শুধু বরিশাল নয়, আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে দেশের আরও আটটি বুটেক্স অধিভুক্ত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। শিক্ষার্থীরা জানায়, সাত দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন, প্রয়োজনে বস্ত্র অধিদপ্তর ঘেরাও করা হবে।
তাদের সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: দ্রুত শিক্ষক ও ল্যাব টেকনিশিয়ান নিয়োগ, সংশোধিত নিয়োগবিধির অনুমোদন, ত্রিপক্ষীয় সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ব্যর্থদের অপসারণ, আদর্শ কাঠামো অনুযায়ী অধিভুক্তি নবায়ন, নির্ধারিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ, পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ, সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা চালু ও রি-টেক ফি কমানো।
কলেজের অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুল কাদের বেপারী শিক্ষার্থীদের দাবিকে যৌক্তিক বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, দাবি বাস্তবায়নে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে।
সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আন্দোলন আরও বিস্তৃত হয়ে সারাদেশে টেক্সটাইল শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আস্থার সংকট সৃষ্টি করতে পারে।