বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন মহাসড়কে ছাত্র আন্দোলন ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকেল ৪টার দিকে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষে অন্তত ৪-৫ জন আন্দোলনকারী এবং একজন বাস চালক আহত হয়েছেন। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ ছিল। দূরপাল্লার পরিবহনগুলো বিকল্প পথে শহরের মধ্যরাস্তা ব্যবহার করে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হঠাৎ আন্দোলনকারীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এরপর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং কিলঘুষি শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো বাস টার্মিনাল দখলে নেয় শ্রমিকরা। পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ায় ছাত্রজনতা সরে যায়।
নথুল্লাবাদ বাস শ্রমিক মোঃ আব্দুস সালাম খান বলেন, “ড্রাইভার নিজেকে রক্ষার জন্য বাসের ছাদে উঠলেও সেখানে গিয়ে ছাত্ররা মারধর করে। প্রতিদিন এমন নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয় চলতে দিতে পারি না। নথুল্লাবাদে আর আন্দোলন হবে না।”
অন্যদিকে, আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী মহিউদ্দিন রনি বলেন, “অন্দোলনে ছাত্ররাও অংশ নিচ্ছে। বুধবার সাগরদি মাদ্রাসার ছাত্ররাও রাস্তায় নেমেছে। শ্রমিকরা তাদের ওপর বিকেলে হামলা চালিয়েছে, এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।”
বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে জানা যায়, নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল শ্রমিকদের দখলে রয়েছে এবং বর্তমানে কোন যানবাহন চলাচল করছে না। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জাকির সিকদার জানিয়েছেন, আন্দোলনকারী ও শ্রমিকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। পরে ছাত্ররা বাস স্ট্যান্ড ছেড়ে যায় এবং শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নেন।
আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো: দেশের সব সরকারি হাসপাতালে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল নিয়োগ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা; স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সব হাসপাতালে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি; ডিজিটাল অটোমেশন ও স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক টাস্কফোর্স গঠন; স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনকে জনগণের ভোগান্তি শুনে তদন্ত, সুপারিশ এবং বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বরিশাল মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, আন্দোলনের যৌক্তিকতা আছে, তবে সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ না হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসনের উচিত জনদূর্ভোগ রোধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু জাফর দুপুরে বরিশালে আসেন। তিনি শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের সম্মেলনকক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সভায় মেডিকেল কলেজের পরিচালক, অধ্যক্ষ এবং চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাপের নেতাদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও অংশগ্রহণ করেন।