প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। বুধবার (১৩ আগস্ট) কুয়ালালামপুরের মালয়েশিয়া ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় (ইউকেএম) থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, সামাজিক ব্যবসা প্রসারে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই সম্মাননা তাকে তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণে দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, গত বছর বাংলাদেশে বহু তরুণ ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে দাঁড়িয়েছে। শত শত ছাত্র-যুবক উন্নত ভবিষ্যতের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, যেখানে প্রত্যেকে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারবে এবং ভয়, বৈষম্য ও অবিচার থেকে মুক্ত থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়তে সরকার কাজ করছে, যেখানে শাসনব্যবস্থা ন্যায়সংগত, অর্থনীতি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সবাই সমান সুযোগ পাবে। তিনি আরও বলেন, সুস্পষ্ট লক্ষ্য, বিস্তৃত পরিকল্পনা এবং দৃঢ় প্রত্যয়ের মাধ্যমে অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনা হবে। এতে উদ্যোক্তাদের সহায়তা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ অন্তর্ভুক্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, তারা আগামী দিনের নির্মাতা। তাদের সৃজনশীলতা, দায়িত্ববোধ ও উদ্ভাবন ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে। প্রকৃত সাফল্য শুধু নিজের জন্য নয়, অন্যদের উন্নতির সঙ্গে এগিয়ে যাওয়াও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বললেন, ‘প্রত্যেক ব্যর্থতাই সাফল্যের পথে একটি ধাপ মাত্র।’
ড. ইউনূস বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, দুই দেশের অংশীদারিত্ব বাণিজ্য, শিক্ষা, উদ্ভাবন ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বিস্তৃত করেছে। তিনি মালয়েশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে সেমিকন্ডাক্টর শিল্প, হালাল অর্থনীতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং উদ্যোক্তা উন্নয়নের মাধ্যমে সমৃদ্ধ, উদ্ভাবনী, স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি জানান।
সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করার জন্য মালয়েশিয়া ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা। অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ও ইউকেএম-এর ভাইস-চ্যান্সেলর উপস্থিত ছিলেন।