প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ২১:৪২
খাগড়াছড়িতে হেফাজতে ইসলামের জেলা কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকেল ৪টায় শহরের মহাজনপাড়া এলাকার এফএনএফ কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই কাউন্সিলে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মীর ইদরীস নদভী এবং প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুফতী বশিরুল্লাহ। কাউন্সিল বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা ক্বারী ওসমান গনী সভাপতিত্ব করেন।
কাউন্সিলে ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে মাওলানা ক্বারী ওসমান গনীকে সভাপতি, শামীম হোসাইন ফারুকীকে সাধারণ সম্পাদক এবং জামাল হাসানকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। তবে কমিটি ঘোষণার পরপরই বিতর্কের সৃষ্টি হয়। কাউন্সিল বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এবং কিছু নেতাকর্মী সংবাদ সম্মেলন করে নবগঠিত কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
বিতর্কিত নেতারা অভিযোগ করেন, কাউন্সিল নির্বাচনের মাধ্যমে হওয়ার কথা থাকলেও সিলেকশন পদ্ধতিতে একটি ‘পকেট কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। তারা উল্লেখ করেন, ঘোষিত কমিটির অধিকাংশ সদস্য খাগড়াছড়ি সদর এলাকার এবং পাহাড়ের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এ ধরনের কমিটির পক্ষে সম্ভব নয়। তারা আরও জানান, নির্বাচনের মাধ্যমে হারলেও তা গ্রহণযোগ্য হতো, কিন্তু এই পদ্ধতিতে গঠিত কমিটি মেনে নেওয়া যায় না।
স্থানীয় নেতারা সাংবাদিকদের জানান, নতুন কমিটির কার্যক্রম এবং সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্থানে সমালোচনা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে পাহাড়ের ভূমি ও স্থানীয় সমস্যা সমাধানে এই কমিটির সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
কাউন্সিলে উপস্থিত ছিলেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা, শিক্ষক, সমাজসেবক এবং ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গ। বিভিন্ন বক্তারা স্থানীয় জনগণের সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
কমিটি ঘোষণার পর জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন নতুন কমিটির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে। তারা জানিয়েছেন, স্থানীয়দের অংশগ্রহণ ও মতামত ছাড়া কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ কার্যকর হবে না।
নবগঠিত কমিটি নিজেদের কার্যক্রম স্বচ্ছ ও কার্যকর রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে স্থানীয় নেতারা সতর্ক করে জানিয়েছেন, জনগণের প্রত্যাশা পূরণ না হলে নতুন কমিটির বিরুদ্ধে আরও প্রতিবাদ ও মতবিরোধ দেখা দিতে পারে।
খাগড়াছড়ির হেফাজতে ইসলামের জেলা কাউন্সিল ও নতুন কমিটি নিয়ে এই বিতর্ক স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশে প্রভাব ফেলতে পারে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নেতারা ও সাধারণ মানুষ এ বিষয়কে নিকটবর্তী সময়ে গুরুত্বসহকারে পর্যবেক্ষণ করছেন।