প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৬
মৌলভীবাজার শহরের শমসেরনগর রোডের হার্ডওয়্যার ও স্টেশনারি ব্যবসায়ী শাহ ফয়জুর রহমান ওরফে রুবেল (৫৫) হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি জুহেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশ। গতকাল ১৭ আগস্ট শ্রীমঙ্গল উপজেলার লইয়ারকুল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি, মাস্ক, জুতা এবং অন্যান্য আলামতও উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছিল গত ৭ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিট থেকে ৭টা ০৫ মিনিটের মধ্যে। অজ্ঞাতপরিচয় এক বা একাধিক ব্যক্তি রুবেলের দোকান “এফ রহমান ট্রেডিং”-এ প্রবেশ করে ধারালো ছুরির আঘাত দিয়ে তাকে হত্যা করে। ঘটনার পর নিহতের পরিবার মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেনের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) নোবেল চাকমা, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল খায়ের, সদর থানার ওসি গাজী মাহবুবুর রহমান ও জেলা গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একাধিক টিম গঠন করে দ্রুত তদন্ত শুরু করে। তারা ঘটনাস্থল, আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করে প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন।
তদন্তের সময় পুলিশ একটি অটোরিকশার চালককে শনাক্ত করে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায়। এছাড়া বিভিন্ন ডিজিটাল প্রমাণ বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তির ছবি সংগ্রহ করা হয়। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর শ্রীমঙ্গল উপজেলার লইয়ারকুল গ্রামের জুহেল মিয়াকে শনাক্ত করা হয়।
জুহেল মিয়া গ্রেপ্তারকালে তার হাতে থাকা ব্যান্ডেজ পুলিশকে তাকে শনাক্তে সহায়তা করে। গ্রেপ্তারের পর জুহেল মিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। পুলিশ তার কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, মাস্ক, জুতা, রক্তমাখা ২০ টাকার নোট, এলবো ও সাসপেনশন গ্লু এবং দোকানের ক্যাশ কাউন্টারের রক্তমাখা ফাইল উদ্ধার করে।
জুহেল মিয়ার পরিবার আর্থিকভাবে খুবই দুর্বল। আগে সে মিষ্টির দোকানে কাজ করতো এবং বর্তমানে বেকার। আর্থিক সমস্যার কারণে সে ছিনতাইয়ের পথ বেছে নেয়। ৭ আগস্ট শহরে ফেরার সময় সুযোগ পেয়ে “এফ রহমান ট্রেডিং” দোকানে রুবেলকে একা দেখে হত্যা করে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সময় নেওয়া কার্যক্রম, তদন্তের অগ্রগতি ও গ্রেপ্তারকৃত আসামি ও উদ্ধারকৃত আলামত সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সাংবাদিকদের জানায়। জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলি এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার অঙ্গীকার করে।
ঘটনার সূত্র ধরে স্থানীয় জনগণ পুলিশি তৎপরতা ও দ্রুত গ্রেপ্তারের প্রশংসা করেছে। এখন আসামিকে আদালতের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করা হবে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য কোনো সহযোগী থাকলে তাদেরও শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের কার্যক্রম চলমান থাকবে।