ডাসারে ফসলি জমিতে চেয়ারম্যানের ঘের তৈরির চেষ্টা! ১৪৪ ধারা জারি

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার ডাসার ইউনিয়নে কৃষকদের ফসলি জমিতে জোরপূর্বক মাছের ঘের তৈরির অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ভাষাই শিকদারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। কৃষকরা অভিযোগ করেন, তাদের একমাত্র জীবিকার উৎস ধানক্ষেত ধ্বংস করে চেয়ারম্যান ভেকু মেশিন দিয়ে জমি কেটে মাছের খামার বানানোর চেষ্টা করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়নের গোপালসেন, কালাইতলা ও জ্বীনবাড়ি মৌজার প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ একর জমিতে কয়েকশ কৃষক ধান উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। এই জমিতে বিভিন্ন শ্রমজীবী মানুষের জীবিকা জড়িয়ে আছে। অভিযোগ উঠেছে, চেয়ারম্যান ওই জমির প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ একর জায়গায় ড্রেজার ও ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ঘের তৈরির চেষ্টা করেন।

এতে কৃষকদের ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। তদন্তে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন, জমি নষ্ট হলে কৃষি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে এবং শ্রেণি পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।

তবে প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে চেয়ারম্যান কাজ চালিয়ে যেতে চাইলে ভুক্তভোগী কৃষক হানিফ মোল্লা আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে ১৮ আগস্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। বর্তমানে ২২ আগস্ট পর্যন্ত ওই ধারা বহাল রয়েছে এবং ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কৃষক হানিফ মোল্লা বলেন, “আমাদের জমি নষ্ট হলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।” স্থানীয় বাসিন্দা শাহীন মাতুব্বর জানান, তাদের পরিবারের ২৫ বছরের ধানচাষ বন্ধ হয়ে যাবে। সুজন মাতুব্বর বলেন, “এতে পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের মারাত্মক ক্ষতি হবে।”

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ভাষাই শিকদার অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কিছু জমি লিজ নিয়েছি। কৃষকদের মত নিয়ে কাজ শুরু করেছি। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিষয়টিকে ব্যবহার করছে।”

ডাসার থানার এসআই সুবির চন্দ্র সূত্রধর জানান, শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে উভয়পক্ষকে আইনের মধ্যে থাকতে বলা হয়েছে। ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফ-উল-আরেফীন বলেন, “ফসলি জমিতে ঘের করার নিয়ম নেই। কৃষকদের স্বার্থে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”