প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৪৬
কুমিল্লার দেবীদ্বারে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘জালাল উদ্দিন ফাউন্ডেশন মা, শিশু ও ডায়াবেটিক হাসপাতাল’ ৫ বছর পর চালু হতে যাচ্ছে। হাসপাতালটি আগামী সেপ্টেম্বর মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে এবং এখানে অসহায় ও গরীব রোগীদের বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হবে।
হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ১ জুলাই। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে ২৪ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৬ তলা বিশিষ্ট ৯ হাজার বর্গফুট আয়তনের হাসপাতালটি বারেরা গ্রামে নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ মূলত ২০২০ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়া সত্ত্বেও নানা জটিলতার কারণে তা ২০২২ ও ২০২৪ সালে দুই দফায় বাড়ানো হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পের দেরির মূল কারণ ছিল ঠিকাদারের অনিয়ম, দূর্নীতি, ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি বোর্ডের কার্যত ঘাটতি এবং করোনাকালের প্রভাব। ৫ বছর আগে ক্রয়কৃত যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্রের একাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও হাসপাতালে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল ও নিরাপত্তার খরচ ফাউন্ডেশনেরই বহন করতে হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পি.সি এন্ড এম.এস.সি (জেভি) সংক্রান্ত অনিয়মও দেরির একটি কারণ। হাসপাতালে লিফট ক্রয়ে জাপানী হিটাচি কোম্পানীর মূল লিফটের পরিবর্তে নকল লিফট সরবরাহ করা হয়েছিল। পরে প্রকৃত লিফটের কাজ শেষ হওয়ার পর ভবন হস্তান্তর করা হয়।
হাসপাতালের পরিচালনা কমিটির সভাপতি একেএম সফিকুল আলম কামাল বলেন, লিফটসহ নানা জটিলতা নিরসন করা হয়েছে এবং সেপ্টেম্বর মাসেই হাসপাতালটি চালু হবে। এখানে মা, শিশু ও ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য অত্যাধুনিক চিকিৎসা সুবিধা থাকবে।
হাসপাতালে ৩০ শতাংশ চিকিৎসা বিনামূল্যে প্রদান করা হবে সমাজের হতদরিদ্র ও গরীব রোগীদের জন্য। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, নার্সিং সেবা ও স্বল্প মূল্যে ডায়াবেটিক চিকিৎসা প্রদান করা হবে।
হাসপাতালে নিয়োগ প্রক্রিয়া ফাউন্ডেশনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কেউ নিয়োগের জন্য টাকা প্রদান করে থাকলেও সরকারি বেতন বা নিয়োগের সুযোগ নেই। সমাজসেবা অধিদপ্তর হাসপাতালের ৮০ শতাংশ অর্থায়ন করেছে এবং ৩০ শতাংশ বিনামূল্য সেবার জন্য বরাদ্দ রেখেছে।
স্থানীয়রা আশা করছেন, এই অত্যাধুনিক হাসপাতালটি চালু হলে দেবীদ্বার ও আশেপাশের এলাকার অসহায় মানুষ বিশেষ চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। হাসপাতালটি সামাজিক কল্যাণ এবং স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।