প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:১৩
কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশপাশের হোস্ট কমিউনিটি এলাকায় রাতভর অস্ত্রের তাণ্ডব চালিয়ে সাধারণ রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে দুষ্কৃতকারীরা। দেশি-বিদেশী ভারি অস্ত্র নিয়ে সজ্জিত কিশোর ও যুবকরা ক্যাম্পগুলোতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এবং ডাকাতি, অপহরণ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটাচ্ছে। সাধারণ মানুষ ভয়ভীত এবং কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না।
মঙ্গলবার ভোররাতে নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আই ব্লক ও শালবাগান ক্যাম্প ২৬-এর আই ব্লকে ডাকাতি কালে রোহিঙ্গারা দলবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এতে ক্ষিপ্ত ডাকাতদল অস্ত্র নিয়ে রাতভর হামলা চালায়। তাদের গুলির ঝনঝনানি এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ডাকাতদল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে, এবং আত্মরক্ষার্থে এপিবিএনও পাল্টা কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়।
পুলিশ সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করেছে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। টেকনাফ ১৬ এপিবিএন অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কাউসার সিকদার জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় ওয়ান সুটার গান উদ্ধার করা হয়েছে। এপিবিএন ক্যাম্পে মোতায়েন রয়েছে এবং অভিযানের মাধ্যমে কোন অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া হ্নীলা ইউনিয়নের লেদার নুরালী পাড়ায়ও রাতভর ডাকাত দল প্রায় তিনশত রাউন্ড ওপেন ফায়ার চালিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ডাকাতরা রোহিঙ্গাদের বাড়িতে ডাকাতি করতে গেলে সাধারণ রোহিঙ্গারা প্রতিহত করে। এতে কয়েকজন আহত হয় এবং ডাকাতরা ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয়দের বাড়িতে হামলার চেষ্টা করে।
নুরালী পাড়ার বাসিন্দা মো. হোছন জানান, ডাকাতদের গুলিতে তার বাড়ির বাউন্ডারিতেও গুলি লেগেছে। তারা প্রান নাশের হুমকি দিয়েছে এবং এলাকায় নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষ ভীত এবং আতঙ্কিত।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, গুলির বিষয়টি তিনি শুনেছেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশেপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ এবং স্থানীয়রা আশা করছেন, দ্রুত অভিযানের মাধ্যমে দুষ্কৃতকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং এলাকায় শান্তি ফিরবে।