প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:৩১
কক্সবাজারের টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ (এপিবিএন) ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ১১ জনকে আটক করেছে। এসময় তাদের কাছ থেকে বন্দুক-গুলি ও দেশী অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন আব্দু রশিদ, নুরুল আমিন, পেঠান আলী, মো. সুলতান, আবুল হাসিম, মো. সলিম, মোঃ শরিফ, মোঃ ফারুক, ওমর ফারুক, বিবি আয়েশা ও বিবি ছারা।
টেকনাফ ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কাউছার সিকদার জানান, গোপন সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার রাতের সময় নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি-ব্লকের বিকাশ মোড়ে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় ডাকাতরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ৪৫-৫০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে পালানোর চেষ্টা করে, তবে এপিবিএন পুলিশ আত্মরক্ষার্থে রাবার বল এবং লিডবল কার্তুজ ব্যবহার করে।
পরে কৌশলগতভাবে অভিযান পরিচালনা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শীর্ষ ডাকাত ও তাদের সহযোগীদের আটক করতে সক্ষম হয়। তাদের দেহ তল্লাশি করে ১টি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার গান, ৩ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ১টি লোহার তলোয়ার, ১টি কাঠের বাটযুক্ত রামদা, ১টি কাঠের বাটযুক্ত চাকু, ১টি লোহার স্কয়ারবার তৈরি দেশীয় অস্ত্র এবং ১টি লোহার ছুরি উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা স্বীকার করে যে, তারা ৪০-৪৫ জন সহযোগী ডাকাতের সঙ্গে ডাকাতি করতে চেয়েছিল। অভিযানকালে তাদের কিছু সহযোগী এপিবিএন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ও লাঠি-সোঠা নিক্ষেপ করে আটকদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আটক ডাকাতদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা, ডাকাতি, অপহরণ, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। বর্তমানে ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক এবং অজ্ঞাত ডাকাতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার শালবাগান ও নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডাকাতি চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ডাকাতরা উপর্যুপরি তিন শতাধিক রাউন্ড গুলি চালায়, যা আশপাশের হোস্ট কমিউনিটি এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
এপিবিএন কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতেও অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের এই দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন, এ ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড রোধে ব্যবস্থা আরও কার্যকর হবে।