জীব‌নের শ্রেষ্ঠ প্রা‌প্তি পরীম‌নি

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার ১৪ই মার্চ ২০২২ ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন
জীব‌নের শ্রেষ্ঠ প্রা‌প্তি পরীম‌নি

গত শুক্রবার ২০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘মনপুরা’ খ্যাত পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিমের গুণিন। এতে প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমনি ও চিত্রনায়ক শরিফুল রাজ।এই সিনেমাটি পরীমনি ও রাজের কাছে খুবই স্পেশাল। কারণ গুণিন করতে গিয়ে তাদের পরিচয়, প্রেম ও পরিণয়। সিনেমাটির প্রিমিয়ার মঞ্চে অকপটে এ কথা নিজেরাই জানিয়েছিলেন এই তারকা দম্পতি। এখন তারা অনাগত সন্তানের মুখ দেখার অপেক্ষায়।


যে সিনেমাটির কারণে তাদের যৌথ জীবনের যাত্রা শুরু, সেই গুণিন-এ কাজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে রাজ বলেন, ‘গুণিন সিনেমায় আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ও আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন আমার স্ত্রী পরী এবং আমাদের অনাগত সন্তান।’রোববার বিকেলে কয়েকটি ছবি পোস্ট করে ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ কথা বলেন রাজ।


গুণিনে কাজ করতে পারবেন কি পারবেন না সেই দোলাচলের বর্ণনা দিয়ে সেই স্ট্যাটাসে রাজ লেখেন, ‘রাত দুইটায় গুলশান ৭১ নাম্বার রোডে বসে ভাবছি শুটিং টা করতে পারব কি না, হাতে তখনও দুইটা স্ক্রু লাগানো, কোনো ভাবেই নিজেকে মানষিক ভাবে উপযুক্ত মনে হচ্ছিল না, ডক্টর সাফ জানিয়ে দিল এই অবস্থায় শুটিং করা সম্ভব না। অথচ শুটিংয়ের বাকি তখন ছয় কি সাত দিন। অবাক করা বিষয় সেলিম ভাই শেষ দিন অব্দি অপেক্ষায় ছিলেন, ওটাই হয়ত আমার মনোবলকে চাঙা করেছে।


‘শুটিং এর জন্য আমার সেকেন্ড লাইন আপ ও রেডি ছিলো! পরেরদিন এই অবস্থায় রিহার্সালে গেলাম, রিহার্সালে গিয়ে দেখা হলো পাভেল ভাইর সঙ্গে, পাভেল ভাই মজার ছলেই বললেন রাজ শুটিং করবে কিভাবে? রাজকে আমরা শুটিংয়ে চা নাস্তা বানাইতে নিয়ে যাই। পরক্ষণেই তিনি সাহস দিলেন আর বললেন, আমার নিজের হাতেই স্ক্রু বসানো, ভয় পাইস না, মনে সাহস রাখ।’


তিনি লেখেন, ‘এই সিনেমায় অনেক বেশি সাহস আমাকে জুগিয়েছে আমাদের ডিওপি খসরু ভাই, তিনি বিভিন্ন সময়ে নানা ভাবে আমাকে উৎসাহিত করত, তার উৎসাহে আমি সত্যিই কাজের উদ্যম ফিরে পাই। গুণিনে কাজ করতে গিয়ে যেই মানুষ টা আমাকে সবসময় ছায়ার মতো বড় ভাইয়ের মতো সাহস যুগিয়েছেন তিনি মনোয়ার ভাই। আমি আর মনোয়ার ভাই এক রুমেই থাকতাম, এইজন্য মনোয়ার ভাইয়ের কাছ থেকে প্রতি মুহূর্তেই অনেক কিছু শিখেছি এই সময়ে।’


রাজের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। সেখানেই হয়েছে সিনেমাটির শুটিং। একই সঙ্গে গিয়াসউদ্দিন সেলিমের মতো নির্মাতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে চাননি তিনি।সে কথা উল্লেখ করে এই চিত্রনায়ক লেখেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমার নিজের শহরে শুটিং হবে সেইটা নিয়েও অনেক এক্সাইটমেন্ট কাজ করছিল। তাছাড়া সেলিম ভাইয়ের মতো এত বড় একজন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ আমি কোনো ভাবেই হাতছাড়া করতে চাইনি। আমার ভাঙ্গা হাতটা ঠিক করে দেয়ার জন্য সেলিম ভাইকে ধন্যবাদ।’


গত বছরের আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন রাজ। সেই দুর্ঘটনার পরে মানসিক ট্রমায় ছিলেন উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘এক্সিডেন্ট করার পরে আসলে বেশ কিছুদিন আমি মানসিক ট্রমায় ছিলাম, কিন্তু আমার বার বার মনে হচ্ছিল এই শুটিং আমাকে সবকিছু থেকে বের করে আনবে। সেই কাজটাই খুব সুচারু এবং নিপুণ ভাবে করেছে গুণিন পরিবার। গুণিন পরিবারের সবাই শুটিংয়ের সময় আমাকে যেই পরিমাণ ভালোবাসা এবং যত্ন করেছে আমি গুণিন পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্যের কাছে কৃতজ্ঞ।’


তবে গুণিন সিনেমাটি করতে গিয়েই জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জনটি এসেছে রাজের জীবনে। সেই অনুভূতির কথা জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘গুণিন সিনেমায় আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ও আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন আমার স্ত্রী পরী এবং আমাদের অনাগত সন্তান। এই লেখায় তার সম্পর্কে লিখতে গেলে অনেক বড় হয়ে যাবে, তাকে নিয়ে অন্য আরেকদিন, সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’রাজ-পরী বাদেও গুণিনে গুরুত্বপূর্ণ সব চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিলারা জামান, ইরেশ যাকের, মোস্তফা মন্ওয়ার, শিল্পী সরকার অপু, ঝুনা চৌধুরীসহ অনেকে।