প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৭
বাংলা লোকসংগীতের স্বনামধন্য শিল্পী ফরিদা পারভীন ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তার মৃত্যুতে সংগীতপ্রেমী ও শিল্পীবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। মৃত্যুর সংবাদটি হাসপাতাল থেকে তার স্বামী, প্রখ্যাত বংশীবাদক ওস্তাদ গাজী আব্দুল হাকিম নিশ্চিত করেছেন।
শ্রদ্ধা জানাতে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মরদেহ নেওয়া হবে। এর আগে সকালেই শিল্পীকে ‘অচিন পাখি’ নামে তার গানের স্কুলে নিয়ে যাওয়া হবে। সকাল ৯টায় তেজকুনি পাড়া মসজিদে ফরিদা পারভীনের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় মরদেহ ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়া হবে। সেখানে আরেকটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ কুষ্টিয়ায় নেওয়া হবে এবং সেখানে তার বাবা-মায়ের কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ফরিদা পারভীনের সঙ্গীতজীবন নজরুলসংগীত দিয়ে শুরু হলেও জীবনের প্রধান অংশ কেটেছে লালন সাঁইয়ের গান পরিবেশন এবং তা জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে। তার কণ্ঠে লালনের গান সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।
শিল্পীর সঙ্গীতজীবনে লালনের বাণী ও সুরকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার বিশেষ অবদান রয়েছে। তার কণ্ঠস্বর ও সুরের মেলবন্ধন শ্রোতাদের মনে চিরস্থায়ী ছাপ রেখেছে। কেবল বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সংগীতপ্রেমীরা তার গানে আনন্দ এবং সান্ত্বনা খুঁজেছেন।
ফরিদা পারভীন শুধু একজন গায়িকা ছিলেন না, তিনি একভাবে বাংলার লোকসংগীতের প্রাণ। তার মৃত্যুতে সংস্কৃতি ও সংগীতমহলে একটি শূন্যস্থান সৃষ্টি হয়েছে। শিল্পী, কলাকুশলী এবং সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ও শোকের মধ্যে তার স্মৃতি চিরকাল বেঁচে থাকবে।
তার স্বামী ও পরিবারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যারা শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন, তারা সকাল সকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত হোন। তার অবদান স্মরণীয় রেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংগীতের প্রতি অনুপ্রেরণা হিসাবে তার নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।