প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১১
প্রায় ৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ভোটের এই পরিবেশ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের উৎসবমুখর আবহ সৃষ্টি করেছে।
দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক আগ্রহ ও অংশগ্রহণ দেখাচ্ছেন। শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ক্যাম্পাসজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্থাপন করা হয়েছে নজরদারি ক্যামেরা।
কেন্দ্রীয় সংসদের নির্বাচনে ১৭৭ জন এবং হল সংসদ নির্বাচনে ৪৪৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯ জন আর জিএস পদে ৮ জন প্রার্থী। গঠনতন্ত্র সংস্কারের মাধ্যমে ১৪টি পদ থেকে বাড়িয়ে ২৫টি পদ করা হয়েছে, যার মধ্যে ছাত্রীদের জন্য ছয়টি সংরক্ষিত।
নেতৃত্বে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যেই নতুন পদ সংযোজন করা হয়েছে। এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের কাছে ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। পাশাপাশি ভোটে অংশ নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব সক্রিয় ছাত্র সংগঠন, যা নির্বাচনকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলেছে।
সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ, আনসার ও বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীও সতর্ক অবস্থায় থাকবে এবং প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে দায়িত্ব পালন করবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ভোট গণনায় ব্যবহার করা হবে বিশেষ ওএমআর মেশিন, যা দ্রুত ফলাফল ঘোষণা করতে সহায়তা করবে। এটি নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা বাড়াবে।
ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে সিনেট হলে স্থাপন করা বড় স্ক্রিনে প্রদর্শন করা হবে। প্রতি ঘণ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ফলাফলের আপডেট দেওয়া হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা তা সহজে জানতে পারেন।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ও জনসংযোগ দপ্তরের ফেসবুক পেজেও ফলাফল প্রকাশ ও নির্দেশনা দেওয়া হবে। দীর্ঘদিন পর এই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চার নতুন পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আশাবাদ তৈরি করেছে।