হাতীবান্ধায় সাংবাদিককে মারধর করল চেয়ারম্যান প্রার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক
মাসুদ বাবু, জেলা প্রতিনিধি (লালমনিরহাট)
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৩শে ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:৫৫ অপরাহ্ন
হাতীবান্ধায় সাংবাদিককে মারধর করল চেয়ারম্যান প্রার্থী

রাজাকার ও রাজাকারের সন্তান নিয়ে লেখালিখি করায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বাড়ি যাওয়ার পথে সাংবাদিক হযরত আলীর পথরোধ করে তাকে মারধর করেছেন নৌকা প্রতীক প্রার্থী নুরল আমিন ও তার লোকজন। গুরতর আহত ওই সাংবাদিক বর্তমান হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।



এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে ভুক্তভোগী হযরত আলী নৌকা প্রার্থী নুরল আমিনকে প্রধান আসামী করে মোট ৭জনের নাম উল্লেখ করে হাতীবান্ধা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।



এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের পূর্ব সিন্দুর্না গ্রামের চাম্পাপুল এলাকার ৮নং ওয়ার্ডে এই মারধরের ঘটনাটি ঘটেছে। 



ভ‚ক্তভোগী হযরত আলী উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের নুর মোহাম্মদের ছেলে। এছাড়া সে দৈনিক ভোরের আওয়াজ পত্রিকার হাতীবান্ধা উপজেলা প্রতিনিধি।



অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে নৌকা মার্কার প্রার্থী নুরল আমি(৫০), আমিনের ছেলে সিয়াম(২৭), সিতাব(২৪), মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে নজরুল ইসলাম(৪৫), আব্দুল আজিজের ছেলে শাহিন(২৫), আব্দুল মজিদের ছেলে জুয়েল(২৭) ও ফেরদৌস(২১)।



জানা গেছে, আগামী ২৯ ডিসেম্বর উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই উপ-নির্বাচনের নৌকা প্রতীক প্রার্থী নূরল আমিন। এমতাবস্থায় আহত সাংবাদিক হযরত আলী বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পেশাগত দ্বায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় নৌকা প্রতীক প্রার্থী নূরল আমিন ও তার লোকজন সাংবাদিক হযরতের পথরোধ করে তাকে মারধর করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।



এ বিষয়ে আহত সাংবাদিক হযরত আলী বলেন, নূরল আমিন একজন চিহিৃত রাজাকের সন্তান। আমি রাজাকার ও রাজাকের সন্তান নিয়ে বিভিন্ন সময় আমার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করি। এরই সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার রাতে রাজাকারের সন্তান আমিন তার ছেলে সিয়াম, সিতাব ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারধর করে। আমার বাম চোখে আঘাত করায় রক্ত জমাট বাধে। আমার দেখতে সমস্যা হচ্ছে। থানায় অভিযোগ করেছি আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।



এ বিষয়ে অভিযুক্ত নূরল আমিনকে একাধিক বার ফোন করা হলে তিনি কলটি বার বার কেটে দেন।



এ বিষয়ে হাতীবান্ধা রিপোর্টাস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। এ নিয়ে একটি মিটিং আহবান করা হয়েছে।



এ বিষয়ে লালমনিরহাট রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি ইউনুস আলী বলেন, হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানাই।



এ বিষয়ে মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের লালমনিরহাট জেলা সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আসাদুজ্জামান সাজু বলেন, সাংবাদিকের উপর হামলা বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখ জনক। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করছি।



এ বিষয়ে হাতীবান্ধা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক নূরুল হক বলেন, সাংবাদিককের উপর হামলা খুবই দুঃখজনক। প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।



এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ জুয়েল রানা বলেন, হযরত আলী চিকিৎসাধীন আছেন। তার বাম চোখে রক্ত জমাট বেধেছে। তাকে সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে।



এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।