কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে মায়ের শেষকৃত্যে দুই মেয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৫ই এপ্রিল ২০২২ ০৩:৫৫ অপরাহ্ন
কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে মায়ের শেষকৃত্যে দুই মেয়ে

নদিয়া জেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম মাটিয়ারির বাসিন্দা অশীতিপর বৃদ্ধা রোহতন বিবি দীর্ঘ দিন ধরেই ভুগছিলেন যকৃৎ সংক্রমণে। রবিবার দুপুরে মৃত্যু হয় তাঁর। শেষশয্যায় তাঁর তিন সন্তানের মধ্যে এক মাত্র ছেলে শুকুর মণ্ডল কাছে ছিলেন। কিন্তু দুই কন্যা বৈবাহিক সূত্রে পড়শি বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা। রোহতনের শেষ ইচ্ছা ছিল তাঁর ‘জানাজা’ (শেষযাত্রা)-য় তাঁর মেয়েরা উপস্থিত থাকবে। সেই মতো খবর দেওয়া হয়েছিল দুই মেয়েকেই। কিন্তু বাদ সাধল কাঁটাতারের বেড়া।


রোহতনের দুই মেয়ের কারও কাছে পাসপোর্ট নেই। অতএব সমস্যা সমাধানে দাদা শুকুর ছুটলেন ৫৪ নম্বর ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সীমা চৌকিতে। খুলে বললেন সব। জোর তৎপরতা শুরু হল বিএসএফ আধিকারিকদের মধ্যে। একের পর এক ফোন চালাচালির পর অবশেষে এল বিএসএফ-এর অনুমতি। কিন্তু এ পার থেকে অনুমতি মিললেই হবে না। বাংলাদেশের তরফে অনুমতি আসতে দেরি হচ্ছিল। ফলে মায়ের শেষযাত্রায় দুই মেয়ের যোগ দেওয়ার যাবতীয় উদ্যোগ জলে যেতে বসেছিল। শেষমেশ বিএসএফ-এর উদ্যোগে ও পার থেকেও মিলল সবুজ সঙ্কেত। জিরো লাইনে দেখা হল মা-মেয়ের। মুছে গেল কাঁটাতার। মাটিয়ারিরই বাসিন্দা শঙ্কর মণ্ডলের কথায়, ‘‘এই দৃশ্য সীমান্তে বিরল।’’


বিএসএফ-এর দক্ষিণবঙ্গ বিভাগের জনসংযোগ আধিকারিক সুরজিৎ সিংহ গুলেরিয়ার বক্তব্য, ‘‘বিএসএফ সব সময় সামাজিক এবং মানবিক মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেয়। এটা তারই নজির।’’


রোহতন বিবির বড় মেয়ে রাজিনা চোখের জল মুছতে মুছতে বলে দিলেন, ‘‘আমার মা দেখিয়ে দিয়ে গেল, দু’দেশ কত আপন। বিএসএফ এবং বিজিবিকে ধন্যবাদ।’’