প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩৯
আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে একটি মসজিদে সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে কমপক্ষে ২৭ জন মুসল্লি নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। এই হামলা মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে কাটসিনা রাজ্যের মালুমফাশি এলাকার উঙ্গুয়ান মানতাউ গ্রামে ঘটে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে জড়ো মুসল্লিদের ওপর বন্দুকধারীরা গুলি চালায়। হামলার সময় মুসল্লিরা প্রার্থনার মধ্যে ছিলেন, ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত কেউ এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-মধ্য অঞ্চলে প্রায়ই এ ধরনের সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে। এ এলাকায় জনসংখ্যার মধ্যে পশুপালক ও কৃষকেরা জমি এবং পানির সীমিত সম্পদ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন মাসে উত্তর-মধ্য নাইজেরিয়ায় একই ধরনের হামলায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। ফলে এই অঞ্চলে নিরাপত্তা নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বেগ বিরাজ করছে।
কাটসিনা রাজ্যের নিরাপত্তা কমিশনার নাসির মুয়াজু জানান, হামলার পর আরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উঙ্গুয়ান মানতাউ এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদের উপস্থিতি হামলা রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করছে এবং নিহতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। এছাড়াও হামলার প্রেক্ষিতে গ্রামে জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নাইজেরিয়ার এই ধরনের হামলা প্রায়ই সামাজিক ও অর্থনৈতিক দ্বন্দ্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিশেষ করে সীমিত সম্পদ এবং জমি নিয়ে এলাকায় সংঘর্ষ ঘটতে পারে, যা সময়ে সময়ে সশস্ত্র আক্রমণে রূপ নেয়।
উক্ত ঘটনার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নীরব হলেও, স্থানীয় মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছে এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি দ্রুত স্থিতিশীল করার জন্য সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
নাইজেরিয়ার এই হামলা আবারও প্রমাণ করে, দেশের কিছু অঞ্চলে শান্তি এবং নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এলাকাবাসী আশাবাদী, সেনা ও পুলিশের উপস্থিতি অন্তত এই ধরনের নৃশংস হামলা কমাতে সক্ষম হবে।