প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৫, ১১:৩৬
ইসলামে শুক্রবারের দিনটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। কোরআন ও হাদিসে এই দিনের গুরুত্ব বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, শুক্রবার সপ্তাহের সেরা দিন, এই দিনে আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এই দিনেই জান্নাতে প্রবেশ করেছিলেন এবং এই দিনেই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। তাই মুসলমানদের জন্য এই দিনটি ইবাদতের বিশেষ সুযোগ নিয়ে আসে।
শুক্রবারের অন্যতম প্রধান আমল হচ্ছে জুমার নামাজ আদায় করা। ইসলামে জুমার নামাজ ফরজ করা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের জন্য, যারা শহর বা জনপদে বসবাস করেন। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, জুমার আজান শুনলে দুনিয়াবি সব কাজ ছেড়ে নামাজের দিকে ছুটে যেতে।
এই দিনে বেশি বেশি দরুদ শরীফ পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন রাসূল (সা.)। এক হাদিসে এসেছে, শুক্রবারে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা এ দিনে তোমাদের দরুদ আমার কাছে পৌঁছায়। তাই মুসলমানদের উচিত আজকের দিনে দরুদ পাঠে মনোযোগী হওয়া।
শুক্রবারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো সূরা কাহফ তেলাওয়াত। হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি শুক্রবার সূরা কাহফ তেলাওয়াত করবে, তার জন্য এক সপ্তাহ আলো ছড়াবে এবং সে ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকবে। তাই এ দিনে কোরআন তিলাওয়াতের জন্য সময় বের করা অপরিহার্য।
জুমার দিনে মসজিদে গিয়ে আগে আগে বসা, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনা এবং নামাজ শেষে দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসূল (সা.) বলেছেন, শুক্রবারে একটি মুহূর্ত আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চাইবে, আল্লাহ তা কবুল করবেন। তাই এ সময়কে কাজে লাগানো উচিত।
শুক্রবারকে আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধির দিন হিসেবে ধরা হয়। এ দিনে গোসল করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা এবং দুনিয়াবি বিরোধ-বিদ্বেষ ভুলে ক্ষমাশীল হওয়ার শিক্ষা দেয় ইসলাম। এতে সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ ও ঐক্য দৃঢ় হয়।
আজকের দিনে আমাদের উচিত আত্মসমালোচনা করা—আমরা কি সত্যিই জুমার দিনের মর্যাদা পালন করছি? কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং অন্তরের খাঁটি নিয়ত নিয়ে ইবাদত করা জরুরি। কারণ, আল্লাহর কাছে কেবল সেই ইবাদতই গ্রহণযোগ্য যা আন্তরিকতা ও সুন্নাহ অনুযায়ী সম্পন্ন হয়।
শুক্রবারকে শুধু ইবাদতের দিন হিসেবেই নয়, বরং আত্মশুদ্ধি, দোয়া কবুলের সময় খোঁজা এবং মানবিক সম্পর্ক দৃঢ় করার সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। এই শিক্ষাগুলোই আমাদের দুনিয়ার জীবনকে সুন্দর করবে এবং আখিরাতে মুক্তির পথ তৈরি করবে।