প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৩৭
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে এক সপ্তাহের অভিযানকালে ২২ হাজারের বেশি প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজ এ তথ্য প্রকাশ করেছে। ১৪ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিচালিত এই নিরাপত্তা অভিযানে দেশটির বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনী যৌথভাবে অংশগ্রহণ করে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আবাসন আইন লঙ্ঘনের জন্য ১৩ হাজার ৫৫১ জন, সীমান্ত নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের জন্য ৪ হাজার ৬৬৫ জন এবং শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য ৪ হাজার ৬ জন প্রবাসী রয়েছে। এসব প্রবাসীর মধ্যে অনেককে দেশে ফেরত পাঠানোর আগে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহের জন্য তাদের নিজ নিজ কূটনৈতিক মিশনে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যেই ১২ হাজার ৯২০ জন প্রবাসী তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসিত হয়েছে।
অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে সৌদি আরবে প্রবেশের সময় গ্রেপ্তার হয়েছেন ১ হাজার ৭৮৬ জন, যার মধ্যে ইথিওপিয়ান ও ইয়েমেনি নাগরিকদের সংখ্যা সর্বাধিক। এছাড়া অবৈধভাবে দেশ ত্যাগের চেষ্টা করার সময় আরও ৩৩ জন প্রবাসীকে আটক করা হয়েছে।
অবৈধভাবে প্রবাসীদের আশ্রয় বা পরিবহনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৮ জন সৌদিতে বসবাসরত ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে ২৫ হাজার ৯২১ জন প্রবাসীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যাদের মধ্যে ২৩ হাজার ৪১৯ জন পুরুষ এবং ২ হাজার ৫০২ জন নারী।
সৌদি আইন অনুযায়ী, অবৈধভাবে দেশে প্রবেশে সহায়তার চেষ্টা করলে ১৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানার বিধান রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়মিতভাবে এই ধরনের লঙ্ঘন এড়াতে প্রবাসীদের সতর্ক করে আসছে।
মরু অঞ্চলের দেশ সৌদি আরবে বর্তমানে প্রায় ৩ কোটি ৪৮ লাখ মানুষ বসবাস করছে। দেশটিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ অভিবাসী শ্রমিক কাজ করছেন। সৌদি গণমাধ্যম নিয়মিতভাবে দেশজুড়ে আইন লঙ্ঘনকারীদের গ্রেপ্তার এবং অভিযানের খবর প্রকাশ করে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নিয়মিত নিরাপত্তা অভিযান ও আইন কঠোরভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের সামাজিক ও শ্রম বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছে। গ্রেপ্তার ও প্রত্যাবাসনের ফলে প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং আইন লঙ্ঘনের ঘটনা কমবে।
এই সপ্তাহব্যাপী অভিযানের মাধ্যমে সৌদি সরকার প্রমাণ করেছে যে, দেশের সীমান্ত, শ্রম বাজার এবং আবাসন আইন রক্ষা করতে তারা সর্বোচ্চ সচেতন। প্রবাসীরা অবশ্যই স্থানীয় আইন ও নিয়ম মেনে চলার জন্য নির্দেশিত।