প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৩
কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ছয়জন। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন ফিলিস্তিনের সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন হামাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। বাকি একজন ছিলেন কাতারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। বুধবার বিবিসির খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দোহায় উত্তর কাতারা এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেলে একাধিক বিস্ফোরণ শোনা যায়। ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর ১৫টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয় এ অভিযানে, যা মাত্র ১০ মিনিট স্থায়ী হয়। লক্ষ্যবস্তু ছিল একটি আবাসিক ভবন, যেখানে হামাস নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাঠানো যুদ্ধবিরতির খসড়া নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন।
হামাসের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলার উদ্দেশ্য ছিল সংগঠনের শীর্ষ নেতা খলিল আল হায়া ও জাহের জাবারিনকে হত্যা করা। তবে তারা অক্ষত রয়েছেন। হামাস এ হামলাকে ‘ঘৃণ্য অপরাধ’ ও ‘আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লঙ্ঘন’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, ইসরায়েল শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে ইচ্ছাকৃতভাবে এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
অন্যদিকে কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ছয়জন এবং আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। যদিও তাদের বিবৃতিতে হামাসের নাম উল্লেখ করা হয়নি। কাতার সরকার এ হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ আখ্যা দিয়ে কঠোর নিন্দা জানিয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা যায়, হামলার পরপরই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে যায় এবং আশপাশের বাসিন্দারা নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বাধ্য হন। আবাসিক এলাকায় সরাসরি হামলা চালানোয় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বকে নির্মূল করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। তবে আন্তর্জাতিক মহলে এ ঘটনাকে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
হামাস অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠক চলাকালীন সময়ে এই হামলা প্রমাণ করে যে ইসরায়েল কোনো শান্তিচুক্তি চায় না। বরং আলোচনার যেকোনো উদ্যোগকে ভণ্ডুল করে দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নেতানিয়াহুর সরকার।
কাতার থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেসামরিক এলাকায় এ ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। দোহায় ঘটনার পর কাতারের জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এ হামলার ফলে শুধু হামাস নয়, কাতার-ইসরায়েল সম্পর্কও নতুন জটিলতার মুখে পড়তে পারে।