প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:৪৫
বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অস্থিরতার মুখোমুখি হয়েছে নেপাল। দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি তীব্র জনবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগপত্র দিয়ে হেলিকপ্টারে পালিয়ে গেছেন। তবুও নেপালজুড়ে বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা। প্রশাসন কারফিউ জারি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে।
নেপালের বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে নতুন প্রজন্মের জেন-জি গোষ্ঠী। আন্দোলনের সূচনা তারা শান্তিপূর্ণভাবে করলেও পরে তা সহিংসতায় রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্টের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এই সহিংসতার মধ্যে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন যে তাদের বিপ্লব হাইজ্যাক হয়ে গেছে। জেন-জি নেতারা বলছেন, সুবিধাবাদী অনুপ্রবেশকারীরা আন্দোলনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে এবং এর মূল লক্ষ্য থেকে তা সরে গেছে।
সরকার গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেয়। এর প্রতিবাদেই ৮ সেপ্টেম্বর শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ শুরু হয়। তবে দ্রুতই তা রূপ নেয় সহিংসতায়।
প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঠমান্ডুতে কারফিউ জারি করে এবং পুলিশের লাঠিচার্জে বহু মানুষ আহত হয়। দুদিনের সংঘর্ষে ২০ জনের বেশি প্রাণ হারান, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তাল করে তোলে।
এই আন্দোলনকে ‘জেন-জি রেভল্যুশন’ নাম দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তারা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধের প্রতিবাদ থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনটি এখন দিক পরিবর্তন করেছে এবং তা আর তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই।
তীব্র চাপের মুখে পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। এরপর দেশটির প্রেসিডেন্টও পদত্যাগ করেছেন। তবে তাতেও আন্দোলন থেমে যায়নি। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ অব্যাহত থাকায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, বিক্ষোভের নেতৃত্ব দানকারী অনেক তরুণ এখন উদ্বিগ্ন। তারা মনে করছেন আন্দোলনের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বাইরের শক্তির হাতে। দেশের প্রশাসন ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে কাজ করলেও নেপাল এখন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে দাঁড়িয়ে আছে।