প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৫, ১১:৭
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শেখ হাসিনার পতনের পর এটি হবে দেশের প্রথম নির্বাচন, যা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বুধবার সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, যদি নির্বাচন বৈধ না হয়, তাহলে তা আয়োজনের কোনো অর্থ নেই। তার লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি নির্বাচন নিশ্চিত করা যা পরিষ্কার, গ্রহণযোগ্য এবং জনগণের কাছে উপভোগ্য হয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমরা একটি সঠিক পথে এগোচ্ছি এবং নির্ধারিত লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছি।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর দেখা গেছে দেশের রাজনৈতিক ও নির্বাচন ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে জালিয়াতি, অপব্যবহার এবং শোষণের শিকার ছিল। তিনি পূর্ববর্তী সরকারকে ফ্যাসিস্ট বলে আখ্যা দেন এবং অভিযোগ করেন, তারা অর্থনীতি ধ্বংস করেছে ও সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। দেশের অবস্থা ছিল যেন ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত একটি দেশের মতো।
তিনি বলেন, আমাদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল সংস্কার। রাজনৈতিক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে নির্বাচন প্রক্রিয়া— সব ক্ষেত্রেই পরিবর্তন আনার প্রয়োজন রয়েছে। জনগণের আস্থা ফেরাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।
ড. ইউনূস আরও বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদেরকে শুধু নির্বাচন আয়োজনেই সীমাবদ্ধ থাকা যাবে না, বরং এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে যা ভবিষ্যতেও গণতন্ত্র ও ন্যায্যতাকে সুরক্ষা দেবে। এজন্য রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন অপরিহার্য।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, পাকিস্তান, চীন ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক রয়েছে এবং এই সম্পর্ক বজায় রাখতে চান। পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানকে একটি যৌথ অর্থনৈতিক অঞ্চলে যুক্ত করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য বা সেভেন সিস্টার্সও এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। বঙ্গোপসাগরের ভৌগোলিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে এসব দেশ পারস্পরিক সুবিধা ভাগাভাগি করতে পারবে।
প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বাস করেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও অভ্যন্তরীণ সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নেওয়া সম্ভব হবে, যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।