প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৫, ২০:৯
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার শিগগিরই দেশের সব জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিতে যাচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই এ নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হবে। এ লক্ষ্যে নতুন ফিটলিস্ট তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এরই মধ্যে সিলেটে নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলমকে। তিনি বর্তমানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের ডিসি নিয়োগে রাজনৈতিক সুবিধাভোগী বা বিতর্কিত কর্মকর্তাদের বাদ দেওয়া হবে। কেউ যদি তথ্য গোপন করে বা ছলচাতুরীর মাধ্যমে পদে আসীন হন এবং পরে তা প্রমাণিত হয়, তবে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নতুন ফিটলিস্ট তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতে। এর অংশ হিসেবে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২৫তম ও ২৭তম ব্যাচের ২৬৯ জন উপসচিবের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এদের মধ্যে অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা ফিটলিস্টে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। বর্তমানে ২৮তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের মৌখিক পরীক্ষা চলছে।
এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ৬১ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। অনেক কর্মকর্তা নিজেদের বঞ্চিত দাবি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন। হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছিল, যা সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করেছিল। এ কারণে এবার অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে মাঠ প্রশাসনে বিভিন্ন ব্যাচের কর্মকর্তারা ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে অনেককে ইতোমধ্যে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হলেও মাঠ প্রশাসন থেকে এখনও প্রত্যাহার করা যায়নি। এতে করে প্রশাসনে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একাধিক মন্ত্রণালয়ে সচিব না থাকা এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া প্রশাসনের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়েছে। তারা মনে করেন, ডিজিটাল প্রশাসনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে এ ধরনের কর্মকর্তারা ব্যর্থ হচ্ছেন। এর ফলে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা তৈরি হচ্ছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন সামনে রেখে দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তাদেরই ডিসি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে যারা চূড়ান্তভাবে নিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। সরকার আশা করছে, নতুন নিয়োগে প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরবে এবং নির্বাচনকে ঘিরে মাঠ প্রশাসন আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।