প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:৩৮
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আশা প্রকাশ করে বলেছেন, মহেশখালী-মাতারবাড়ীতে শুধু গভীর সমুদ্রবন্দর নয়, গড়ে উঠবে এক নতুন শহর, যা থেকে তৈরি হবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটি। বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তার এ ভিশন তুলে ধরেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, সদস্য কমোডর তানজিম ফারুক ও মো. সারোয়ার আলম। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. সাইফুল্লাহ পান্না বৈঠকে অংশ নেন।
মিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী মহেশখালী-মাতারবাড়ী প্রকল্পের ওপর একটি প্রেজেন্টেশন দেন এবং মিডার আগামী চার মাসের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, প্রকল্পটি তিন ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রথম ধাপ ২০২৫ থেকে ২০৩০, দ্বিতীয় ধাপ ২০৩০ থেকে ২০৪৫ এবং তৃতীয় ধাপ ২০৪৫ থেকে ২০৫৫ পর্যন্ত।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে এবং জিডিপিতে দেড়শ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যুক্ত হবে। তিনি বলেন, শুধু গভীর সমুদ্রবন্দর নয়, ব্লু ইকনোমি গড়ে তোলার পরিকল্পনায় মহেশখালী অঞ্চল একটি নতুন শহরের জন্ম দেবে। এ শহর থেকে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটি তৈরি হবে, যেখানে সমুদ্রই বিশ্বের পথে আমাদের মহাসড়ক হিসেবে কাজ করবে।
প্রফেসর ইউনূস গভীর সমুদ্র গবেষণার ওপর বিশেষভাবে জোর দেন এবং মহেশখালীতে একটি আন্তর্জাতিক মানের ট্রেইনিং ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি পরামর্শ দেন, বিশ্বস্ত বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া এবং নিজস্ব গবেষণাপত্র তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সমুদ্র জগতে এখনো বাংলাদেশ প্রবেশ করেনি এবং এ বিষয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা নেই। তাই প্রতিষ্ঠান তৈরি করে একাডেমিয়ার মাধ্যমে ওশান ইকনোমি নিয়ে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজন করতে হবে।
বৈঠকে পরিবেশ সংরক্ষণ ও ইকো-ট্যুরিজম পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনাও আলোচ্য বিষয় হয়। এ প্রকল্প শুধু অর্থনৈতিক নয়, পরিবেশ বান্ধবভাবে নতুন শহর গড়ার দিকেও গুরুত্ব দেবে।
প্রধান উপদেষ্টার পরিকল্পনা অনুযায়ী মহেশখালী-মাতারবাড়ী অঞ্চলে এই উদ্যোগ বাংলাদেশের অর্থনীতি, সমুদ্র গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক কনেক্টিভিটির জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।