অবৈধ কিছুই মেলেনি রাজধানীর ৫ বারে অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৪শে সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন
অবৈধ কিছুই মেলেনি রাজধানীর ৫ বারে অভিযান

মদের বারের আড়ালে ক্যাসিনো কিংবা অবৈধ জুয়া পরিচালনার অভিযোগে রাজধানীর পাঁচটি বারে অভিযান চালায় পুলিশ। তবে এসব বারে অবৈধ ক্যাসিনো বা জুয়ার কোনও সরঞ্জামাদির কিছু মেলেনি। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টা থেকে গুলশারের ফু-ওয়াং ক্লাব, মগবাজারের পিয়াসী বার, বাংলা মোটরের গোল্ডোন ড্রাগন বার, শ্যালে ও সামেমাতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

রাজধানীর এই তিনটি স্থানে অভিযান শেষে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি পশ্চিম) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হাবিবুন্নবী আনিসুর রশিদ বলেন, রাজধানীর ক্লাব ও বারগুলোতে অবৈধ ক্যাসিনো বা জুয়া খেলা পরিচালিত হচ্ছে কিনা সেটি দেখতে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। তবে অভিযানে ফু-ওয়াং ক্লাব, পিয়াসী বার ও গোল্ডেন ড্রাগন বারে অবৈধ কিছুই পাওয়া যায়নি। আমরা তাদের বারগুলোর লাইসেন্স চেক করেছি, তারা তাদের বারের কাগজপত্র ঠিকঠাক দেখাতে পেরেছে। তাই এই তিনটি ক্লাবের কোনোটিতে কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

ফু-ওয়াং ক্লাব:
গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোডের ফু-ওয়াং ক্লাবে ক্যাসিনো ও অবৈধ জুয়ার আসর পরিচালিত হয়- এমন তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার বিকাল ৫টার দিকে ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে এ অভিযান চালায় পুলিশ। তবে অভিযানে গিয়ে ক্যাসিনো বা জুয়া খেলার কোনও সরঞ্জামাদি মেলেনি। এখানে একটি মদের বার পাওয়া যায়। ক্লাব কর্তৃপক্ষ সেটির লাইসেন্স দেখাতে পারায় কাউকে আইনের আওতায় আনা হয়নি।

এদিকে ফু-ওয়াং ক্লাবের ম্যানেজার মো. শামীম বিল্লাহ দাবি করেন, ‘ক্লাবের কিছু মেরামত কাজ চলছে তাই গত ৩দিন ধরে ক্লাব বন্ধ রাখা হয়েছে। এই ক্লাবে কোনও ক্যাসিনো বা জুয়া খেলা কখনও হয়নি।’ পুলিশ বলছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল, এই ক্লাবে ক্যাসিনো ও জুয়া খেলা হয়। তবে এখানে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ কিছু আমরা পাইনি।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল আল মামুন জানান, ফু-ওয়াং ক্লাবে ক্যাসিনো রয়েছে এবং জুয়া খেলা হতে পারে এমন অভিযোগে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। তবে এখানে আমরা ক্যাসিনো বা জুয়া খেলার কোনও সরঞ্জাম পাইনি।

গোয়েন্দা তথ্য ছিল ফু-ওয়াং ক্লাবে ক্যাসিনো খেলা হয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ক্যাসিনো ও জুয়াবিরোধী অভিযান চালানোর সময় গত তিন দিন বন্ধ রেখে ক্লাবটি এসব সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলেছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল আল মামুন বলেন, আমাদের কাছে এমন কোনও তথ্য নেই,তবে আমরা তদন্ত করে দেখছি। যদি এমন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় তবে অবশ্যই অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিয়াসী বার:
ফু-ওয়াং ক্লাবে অভিযান শেষে সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারের পিয়াসী বারে অভিযান শুরু করে পুলিশ। অভিযানে তারা সেখানেও ক্যাসিনো বা জুয়া খেলার কোনও সরঞ্জামাদি পায়নি। বারের লাইসেন্স ঠিক থাকায় সেখানেও অভিযান শেষ করা হয়। পিয়াসী বার প্রসঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পিয়াসী বারে অবৈধ কোনও জুয়ার আসর বা ক্যাসিনো আমরা পাইনি। বারের অনুমোদন রয়েছে। এছাড়া অবৈধ কোনও কিছু মেলেনি তাই আইনি কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।


গোল্ডেন ড্রাগন বার:

রাজধানীর বাংলামোটরের ইস্কাটন রোডের গোল্ডেন ড্রাগন অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। তবে এই বারটিতেও ক্যাসিনো ও অবৈধ জুয়া খেলার কোনও সরঞ্জামাদি পাওয়া যায়নি। গোল্ডেন ড্রাগন বারে অভিযান শেষে, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি পশ্চিম) অতিরিক্ত উপ কমিমনার (এডিসি) হাবিবুন্নবী আনিসুর রশিদ বলেন, আমাদের তথ্য ছিল এটি একটি বার। তবে এখানে অনৈতিক কোনো কিছু হয় কিনা, সেটা দেখতে এখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে আমরা অবৈধ কিছু পাইনি। বারের লাইসেন্স দেখেছি, তাদের কাগজপত্র সব ঠিক আছে। অনৈতিক কিছু না পাওয়ার কারণে এখানে কাউকে আইনের আওতায় আনা হয়নি বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

শ্যালে ও সামেমার দুটি বারে অভিযান চালিয়েও অবৈধ কোনও কিছু পাওয়া যায়নি। এ কারণে এই দুটি বার কর্তৃপক্ষের কাউকে আইনের আওতায় আনা হয়নি। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে এই দুটি বারে অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। তবে বারের লাইসেন্স ও মালামাল আমদানির অনুমতিপত্র নিয়ম অনুযায়ী রয়েছে বলে জানিয়েছে অধিদফতরের কর্মকর্তারা।

অভিযান শেষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উত্তরা জোনের পরিদর্শক কামরুল হাসান জানান, আমরা প্রথমে বাংলামোটরের শ্যালে বারে এবং পরে সালেমার বারে অভিযান পরিচালনা করি। সেখানে সব কিছু তল্লাশি ও যাবতীয় কাগজপত্র ও লাইসেন্স দেখেছি। কোনও অনিয়ম পাইনি। তাদের লাইসেন্স ও মালামাল আমদানির অনুমতি থাকায় কাউকে আটক করা হয়নি।