প্রকাশ: ৭ আগস্ট ২০২৫, ১৯:২২
রাশিয়ার সঙ্গে তেল বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কড়া প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছে ভারত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আচমকাই ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছেন। হঠাৎ এই সিদ্ধান্তে ভারতীয় রপ্তানি খাত চরম ধাক্কা খেয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশটির শেয়ারবাজারেও।
বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের সেনসেক্স সূচক ৩৩৫.৭১ পয়েন্ট পড়ে ৮০ হাজার ২০৮.২৮-এ এসে ঠেকে। পাশাপাশি নিফটি সূচক কমে দাঁড়ায় ২৪ হাজার ৪৬০.০৫-এ। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের মাঝে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, বিশেষ করে যেসব খাত রপ্তানি নির্ভর তাদের জন্য এ শুল্ক বৃদ্ধিকে দেখা হচ্ছে চরম হুমকি হিসেবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতির ফলে এখন ভারত হয়ে উঠেছে সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপিত মার্কিন বাণিজ্য অংশীদারদের একটি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুল্ক পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে ৩০ থেকে ৪০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে।
এইচডিএফসি সিকিউরিটিজ-এর সিইও ধীরাজ রেল্লি বলেন, শুল্ক পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির গতি হ্রাস পাবে। যদিও ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক এখনো জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৫ শতাংশেই ধরে রেখেছে।
এদিকে, কোটাক মাহিন্দ্রা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান নিলেশ শাহ জানান, শুল্ক বৃদ্ধি ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন বিনিয়োগ পরিবেশে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। এতে ভারতের বৈদেশিক বিনিয়োগে নেতিবাচক ধাক্কা আসতে পারে।
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের সভাপতি এস.সি. রালহান বলেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ভারতের রপ্তানি বাজারে এক বড় ধাক্কা। মার্কিন বাজারে ভারতের রপ্তানির ৫৫ শতাংশই প্রভাবিত হবে এই শুল্কের কারণে। এতে রপ্তানিকারকদের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে এবং তারা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বেন।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এ পরিস্থিতি যদি দ্রুত সমাধান না হয়, তবে ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে। এখন দেখার বিষয়, ভারত সরকার এই সংকট মোকাবেলায় কী ধরনের কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়।