প্রকাশ: ৫ আগস্ট ২০২৫, ১১:৪৭
বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দিনটি শুধু জাতীয় নয়, আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটেও এক নজিরবিহীন ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, এই দিনটি ছিল ফ্যাসিবাদমুক্তির বিজয় দিবস। বাংলাদেশ যেমন স্বৈরতন্ত্রের গ্লানি থেকে মুক্তি পেয়েছে, তেমনি নতুন এক গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার সূচনা করেছে।
তারেক রহমান বলেন, শেখ হাসিনার দীর্ঘ ফ্যাসিস্ট শাসনে দেশের মানুষ গুম, খুন, নির্যাতন, মামলা, দুঃশাসনের শিকার হয়েছে। গণতন্ত্রপ্রেমী নেতাকর্মীরা বছরের পর বছর পরিবার ও স্বজন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় জীবন কাটিয়েছেন। শত শত মানুষ গায়েব হয়ে গেছে, অনেকে চোখ ও অঙ্গ হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামে এবং ফ্যাসিবাদী শক্তিকে উৎখাত করে।
তিনি জানান, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশনসহ সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ছিল একেবারে ভেঙে পড়া অবস্থায়। শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছিল, যেখানে ছাত্রদের হাতে বই-খাতা নয়, বরং চাপাতি, বৈঠা তুলে দেওয়া হয়েছিল। অর্থনীতি ছিল ধ্বংসের মুখে, ব্যাংক লুটপাট, টাকা পাচার ছিল রোজকার চিত্র।
তারেক রহমান দাবি করেন, এই বিপ্লব শুধু রাজনৈতিক নয়, একটি মানবিক অভ্যুত্থানও। দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ, রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে শিক্ষক, সাংবাদিক, নারী, শিশু—সকলেই এই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। কোলের শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত কেউ রেহাই পায়নি ফ্যাসিস্টের গুলির হাত থেকে।
তিনি বলেন, ৭১ সালে যেমন মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের জাতি আজও স্মরণ করে, তেমনই ২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদেরও জাতি স্মরণে রাখবে। এই রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে একটি ইনসাফভিত্তিক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠন করতে হবে, যেখানে জনগণের ভোটে সরকার গঠিত হবে।
তিনি আহ্বান জানান, কেউ যেন আইন নিজের হাতে না তুলে নেয়, নারীর প্রতি সহিংসতা না করে, বরং সকলের স্বাধীনতাকে সম্মান দিয়ে একটি মানবিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে সকলকে সচেষ্ট হতে হবে। তাঁর মতে, আগামীর প্রতিটি ৫ আগস্ট হয়ে উঠুক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারের দিন।