বিদায় বেলায় অশ্রুসিক্ত গোয়ালন্দের ইউএনও

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ১৩ই জুন ২০২২ ০৭:২৮ অপরাহ্ন
বিদায় বেলায় অশ্রুসিক্ত গোয়ালন্দের ইউএনও

চোখে ছিলো পানি, তবুও স্নিগ্ধ হাসি দিয়ে সহকর্মী ও উপজেলার সকলের কাছ থেকে বিদায় নিলেন ইউএনও আজিজুল হক খান মামুন।


রবিবার (১২ জুন) রাতে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)’র  বাসভবন থেকে বিদায় বেলায় দেখা গেলো এমন হৃদয় বিদারক চিত্র।


বিদায় কালে ইউএনও আজিজুল হক খান বলেন, ভালো থাকুক গোয়ালন্দ উপজেলার প্রতিটি মানুষ। আমার কর্মজীবনে সেরা সঞ্চয় পেয়েছি আপনাদের ভালোবাসা। সরকারি চাকুরিজীবী হিসেবে বদলিজনিত কারণে কোনো জেলায় বা উপজেলায় স্থায়ী হওয়ার সুযোগ নেই প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের। উপজেলায় কর্মরত অবস্থায় সহকর্মী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অনেক রকমের সহয়তা আমি পেয়েছি। কাজ আদায় করার জন্য হয়তো কারো বিরাগভাজন হয়েছি। অনেক সময় ইতিবাচক আবার কখনো নেতিবাচক ভাবে মানুষকে উপস্থাপন করা হয়। খোলা চোখ দিয়ে সবকিছু দেখা যায় না। চোখের আড়ালেও অনেক কিছু থাকে। তবে নিজের অজান্তেও যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি, কারো প্রতি অন্যায় করে থাকি তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।


বিদায়বেলায় উপস্থিত বেশির ভাগ মানুষের চোখেই ছিলো পানি। আবেগ থামাতে না পেরে কেঁদে ফেলেন অনেকেই। তৈরি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।


জানা যায়, ২০২১ সালের ২৭ এপ্রিল গোয়ালন্দ উপজেলা ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন আজিজুল হক খান মামুন। পদোন্নতী পেয়ে ঢাকার নারায়নগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পরবর্তী কর্মস্থলে যোগদান করবেন তিনি।


বলা যায়, তিনি কখনো সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেননি। তিনি সকলকে নিজের আপন মানুষ ভেবে কাজ করেছেনে এবং সেটা সবার চোখেও পড়েছে। দীর্ঘ এই সময়ে কেবল প্রশংসিত হয়েছেন তা নয়, কখনও সমালোচিতও হয়েছেন তিনি। তবুও মানবতার ক্ষেত্রে চুল পরিমাণ ঘাটতি রাখেননি এই ইউএনও। এর আগে উপজেলার সরকারি- বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও প্রেসক্লাব ও সাংবাদিকদের সংগঠন ও বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে বিদায় সংবর্ধনা জানান আজিজুল হক খান মামুন'কে।


দৈনিক সমকাল পত্রিকার গোয়ালন্দ প্রতিনিধি ও বৈশাখী টিভির জেলা প্রতিনিধি আজু শিকদারের ফেসবুকের টাইম লাইন থেকে নেয়া ও গোয়ালন্দ পৌরসভার এ্যাসেসর আসাদুজ্জামান সেলিম এর ইউএনওর বিদায় উপলক্ষে লেখা,


পদ্মা পাড়ে আসলেন তিনি

ক্ষনিকেরই তরে;

পা খানি রাখলেন শুধুই,

বসলেন না মোর ঘরে।

আসার পরে হয়নি দেখা

পাইনি কোন ডাক,

দূর থেকেই শুনেছি তাঁর

জয়ধ্বনির ঢাক।

কর্তাগিরি কমই করেছেন

ছিলেন সাধারণ;

ভালোবাসায় ভাসিয়েছেন,

বিমুগ্ধ জনগণ!

সবার সাথেই হাসিমুখে

মনের কথা বলেন,

অল্পদিনেই অনেক গল্পের

জনক তিনি হলেন।

আমারও ছিল কত কথা,

হলোনা আর বলা;

রাজনীতি,সমাজকর্ম আর

নিয়ে শিল্পকলা।

জানিনা কবে হবে দেখা

কথা হবে আর কিনা,

নিশীথের আড্ডাটা কখনো

জমবেনা তাঁর বিনা!

"কোনদিন যদি না হয় দেখা

না হয় যদি কথা,

বিনয় করে বলি তোমায়

রেখোনা মনে ব্যথা।

ভালো থেকো প্রিয় মানুষ,

মঙ্গলময় হোক দিন;

তোমার কাছে রইলো মোদের

ভালোবাসার ঋণ।"