বরিশালে অবুঝ দুই শিশু সন্তানকে তালাবদ্ধ করে উপার্জনের জন্য রিক্সা নিয়ে ছুটে চলা সেই রনি শিকদার ওরফে ফিরোজের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে দুই শিশু সন্তান মরিয়ম ও নূরকে সরকারি ডে কেয়ার সেন্টারে নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে টানা আঠার মাসের তালাবদ্ধ জীবন থেকে মুক্তি মিলছে মরিয়ম ও নূরের। প্রাথমিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী ও নগদ অর্থ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে অসহায় পিতা ফিরোজের হাতে প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার পৌছে দেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কামরুজ্জামানসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম এক বাবা তার দুই অবুজ সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জীবিকার তাগিদে শিশুদের তালাবদ্ধ করে রেখে কাজে যেতে হয় তাকে। আমি অসহায় পরিবারটির খোঁজ নিতে এসেছি। প্রাথমিকভাবে চাল ও নগদ টাকা পৌঁছে দিয়েছি। তিনি বলেন, সরকার পরিচালিত ডে কেয়ার সেন্টারে শিশুদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা রোববার এসে শিশু মরিয়ম ও নূরকে ডে কেয়ার সেন্টারে নিয়ে যাবে। এরপর দুই শিশু সরকারের তত্ত্বাবধায়নে থাকবে। পাশাপাশি তাদের বাবা রনি সিকদার ফিরোজের কর্মসংস্থান ও বসবাসের ব্যবস্থা করবো।
প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, ডে কেয়ার সেন্টারে প্রতিদিন সকালে দুই শিশুকে দিয়ে আসবে আর বিকেল ৪টায় নিয়ে আসবে। শিশুদের দেখভাল ডে কেয়ার সেন্টার করবে। এতে সুবিধা ফিরোজ নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারবেন, তার আয় বন্ধ থাকবে না। আবার বিকেলে সন্তানদের নিয়ে নিজের কাছে রাখবেন।
তিনি আরও বলেন, ছয় বছর বয়স পর্যন্ত তারা ডে কেয়ার সেন্টারে সরকারি তত্ত্বাবধানে থাকবে। এরপর শেখ রাসেল শিশু পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে থাকবে। সেখানে লেখাপড়া, প্রশিক্ষণ, থাকা-খাওয়া অর্থাৎ সব কিছুই সরকারি উদ্যোগে করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে অসহায় এই পরিবারকে সহায়তার জন্য খোঁজ নিতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম কাউনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমানকে পাঠান।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।