প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ১৬:১৩
বানারীপাড়া উপজেলারইলুহার ইউনিয়ন বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন যাত্রাবাড়ি থানার মাদক মামলায় পাঁচ বছরের রায় ও গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত হয়ে পাশ্চাত্যে চলমান এলাকায় দাপট দেখাচ্ছেন, পুলিশের গেরোয়া নজর এড়িয়ে তিনি মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, শালিস বানিজ্য ও প্রতিপক্ষ দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা–নির্যাতনসহ নানা তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছেন।
গতবছরের আগস্টে রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত বদলের পর আদালত-পরোয়ানা অগ্রাহ্য করে ইলুহার ইউনিয়ন বিএনপি এবং আশপাশের ইউনিয়ন তথা ইউনিয়ন পঞ্চায়েত চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নকে কাজে লাগিয়ে নাসির উদ্দিন স্বজন এবং বাহিনীসহ পুনরায় সক্রিয় হন, যেখানে দীপক হালদার, শংকর মণ্ডল, পঙ্কজ মণ্ডল, মেহেদী হাসান মিরাজ, মিটু খান ও মনিরুল ইসলাম মনির ও অলিউল্লাহ্রানা প্রমুখ তার সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
এলুহার ইউনিয়নের সরবিপর্যন্ত ভয়-ভীতি ও সন্ত্রাসের শাসনে জনজীবন বিপর্যস্ত; প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছে না, কারণ প্রতিবাদের নামে প্রাণহানির হুমকি, জবরদখল ও চাঁদাবাজি যে যার বাড়ি-ঘরে দাপটের শিকার করছে।
সাম্প্রতিক এক ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামকে বাজারের ভিড়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়, তা ছাড়াও মারধরে চাপিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা নেওয়া হয়; আহত রফিকুল এখন ঢাকায় চিকিৎসাধীন, পঙ্গুত্বের শঙ্কায় লিগামেন্ট অস্ত্রোপচার অপেক্ষমান।
ডিসেম্বরের এক ঘটনায় কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ জাহিদুল ইসলাম সোহেলের দোকানঘর জবরদখল ও লুটের চেষ্টা হয়, যার প্রতিবাদে মামলা করতে গেলে নাসির উদ্দিন প্রাণনাশের হুমকি দেন; ভয়ে অধ্যাপক ঘটনাটি জানিয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন বানারীপাড়া থানায়।
২০১২ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় র্যাবের হাতে ৮শ’ পিস ইয়াবা ও দুটি মুঠোফোনসহ গ্রেফতার হন নাসির উদ্দিন; ২০১৯ সালে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা দেন, পলাতক থাকায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয় কিন্তু আদালত-থানার ফাঁকফোকর দিয়ে আজ অবধি তিনি বেসামাল।
জেলমুক্তির পরেও দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে টেকনাফ–কক্সবাজার সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা ও ফেন্সিডিলের বড় চালান এনে ইতোমধ্যে পুরো সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন, যা বানারীপাড়া ছাড়িয়ে দেশের যুবসমাজের জীবনে ভয়াল সংকট সৃষ্টি করেছে।
বানারীপাড়া থানার ওসি মোঃ মোস্তফা জানিয়েছেন, আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানার পাঠানো কপি পেলেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে; তবে মুঠোফোন বন্ধ থাকার কারণে নাসির উদ্দিনের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা বলছেন, নাসির উদ্দিনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গণজাগরণ ছাড়া স্থায়ী সমাধান অসম্ভব; প্রশাসনকে দ্রুত অভিযান চালিয়ে এই সন্ত্রাসী ক্ষমতা ভেঙে দিতে হবে, নতুবা জনমানুষের ভয়-ভীতি ও দুর্ভোগ থামবে না।