প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:৫০
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের ১২ ফুট উঁচু কবরকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পবিত্র কাবা শরীফের আদলে নির্মিত এই কবর ইসলামী শরীয়তের পরিপন্থী এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বলে দাবি করে তৌহিদী জনতা বৃহস্পতিবারের মধ্যে কবর সমান করার আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় গোয়ালন্দ মডেল মসজিদের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করে উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি কঠোর হুঁশিয়ারি দেয়। কমিটির সভাপতি মাওলানা মো. জালাল উদ্দিন প্রামানিক বলেন, আশির দশক থেকে ভন্ড নুরাল নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করে ইসলামকে বিকৃত করেছেন। তিনি কালেমা ও আযানের বাক্য পরিবর্তন করেছিলেন এবং কুরআনকে অবমাননা করেছিলেন।
জালাল উদ্দিন প্রামানিক আরও জানান, মৃত্যুর পর নুরালের কবর ১২ ফুট উঁচুতে নির্মাণ করে কালো রঙে রঙিন করা হয়েছে যা ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ শরীয়তবিরোধী। কবরের দিকনির্দেশনাও ইসলামী নিয়মের বাইরে বলে তাদের অভিযোগ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তৌহিদী জনতা বিষয়টি নিয়ে বিক্ষুব্ধ এবং প্রশাসনের সাথে আলোচনায় এক সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে আরও এক সপ্তাহ সময় বাড়ানো হলেও কোনও সমাধান হয়নি। বৃহস্পতিবারের মধ্যে কবর নিচে না নামালে শুক্রবার জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দসহ রাজবাড়ীর সব উপজেলায় বিক্ষোভ হবে এবং ‘মার্চ ফর গোয়ালন্দ’ কর্মসূচি পালন করা হবে।
কমিটির নেতারা অভিযোগ করেন, নুরালের বড় ছেলে নূর তাজ খ্রিষ্টধর্ম প্রচার করছেন এবং মুসলমানদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করছেন যা জনগণের মধ্যে আরও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। তারা জানান, বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলার তৌহিদী জনতা ইতিমধ্যেই আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা ইমাম কমিটি, গোয়ালন্দ ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি এবং বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তারা একসুরে বলেন, কবর নিচে না নামালে শুক্রবার থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে এবং সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য, নুরাল পাগল আশির দশকে নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করার পর জনরোষের মুখে এলাকা ছাড়লেও পরে পুনরায় ফিরে এসে দরবার শরীফ পরিচালনা শুরু করেন। মৃত্যুর পর তার কবর ১২ ফুট উঁচুতে তৈরি করা হলে এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
এই ঘটনায় গোয়ালন্দ ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ আশা করছে যেন পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে না যায়।