প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১৯
বরিশালের হিজলা উপজেলার মেঘনা নদীতে সোমবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত মৎস্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মোহাম্মদ আলমের নেতৃত্বে এবং কোস্টগার্ডের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মোঃ সাইফুল ইসলামের সহযোগিতায় এই অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা বিপুল পরিমাণ অবৈধ জাল ও খুঁটি জব্দ করা হয়। জব্দের তালিকায় ছিল ২৬টি চায়না দুয়ারী জাল, ৬০টি চর ঘেরা জাল, ৬০০টি চর ঘেরা জালের খুঁটি ও ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল। এছাড়া অবৈধ মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রলারও আটক করা হয়।
মৎস্য অফিসার মোহাম্মদ আলম জানান, জব্দকৃত জাল ও খুঁটির বাজারমূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকা হবে। অভিযান শেষে জব্দকৃত অবৈধ জাল ও খুঁটি আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়। আটককৃত ট্রলারটি পরবর্তীতে নিলামে বিক্রি করা হবে।
তিনি বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এসব অবৈধ জাল ব্যবহার করে দেশের মৎস্যসম্পদ ধ্বংস করছে। এই ধরনের জাল শুধু ইলিশ নয়, দেশীয় প্রজাতির মাছের বংশবিস্তারও নষ্ট করে দেয়। মাছের ডিম ও ছোট মাছ নির্বিচারে ধ্বংস হওয়ায় নদীর জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে।
মৎস্য কর্মকর্তার মতে, জেলেরা জীবিকার প্রয়োজনে মাছ ধরে, কিন্তু তাদের জীবিকার স্বার্থেই মাছগুলোকে পূর্ণতা পাওয়ার সুযোগ দিতে হবে। অন্য কোনো পেশার মানুষ মাছ ধরে না, তাই জেলেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য অবৈধ জাল ব্যবহার বন্ধ করা জরুরি।
অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানান, কিছু জাল এতটাই সূক্ষ্ম যে তা মাছের ডিম ও ছোট মাছের জন্য বড় হুমকি। এ কারণে এসব জালকে দ্রুত ধ্বংস করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যৌথ অভিযানের ফলে মেঘনা নদীতে অবৈধ মাছ ধরার প্রবণতা কিছুটা কমবে এবং মাছের প্রজনন মৌসুমে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে দেশীয় মাছের উৎপাদনও বাড়তে পারে।
প্রশাসন জানিয়েছে, মেঘনা নদীর পরিবেশ ও মৎস্যসম্পদ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান নিয়মিত করা হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ইলিশসহ দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।