প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১১:১৩
পাকিস্তানে হঠাৎ মেঘভাঙা বৃষ্টি ও এর ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মাত্র দুইদিনে দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০০ জন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বুনের, বাজাউর ও বাটগ্রাম অঞ্চল।
স্থানীয় প্রশাসনের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া অতিভারী বৃষ্টিপাতে বহু মানুষ ভূমিধসে চাপা পড়েছেন। কেবল শুক্রবার পর্যন্ত বুনের জেলাতেই ১৫৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে গাডেজি তহশিলে মারা গেছেন ১২০ জন। চাঘারজাই এলাকায় একটি ভবন ধসে একই পরিবারের ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে যেতে গিয়ে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। এতে দুই পাইলটসহ পাঁচজন নিহত হন। অন্যদিকে পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরেও ভূমিধসে আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নীলম ও ঝিলম উপত্যকায় আটকা পড়েছেন প্রায় ৫০০ পর্যটক।
দুর্যোগপূর্ণ এ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে খাইবার পাখতুনখোয়াকে ‘বিপর্যস্ত এলাকা’ ঘোষণা করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়া বিপর্যয় মোকাবিলা এজেন্সি জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু এ প্রদেশেই ১৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ১৬৩ জন পুরুষ, ১৪ জন নারী ও ১২ শিশু। হিগুকান্দ ও পীর বাবা এলাকায় এখনও বহু মানুষ আটকা রয়েছেন।
এছাড়া বন্যার পানিতে ভেসে গেছে আল মদিনা নামে একটি হোটেল। অনেক গ্রাম সম্পূর্ণভাবে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। সেখানকার মানুষের খাদ্য, পানি ও আশ্রয়ের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে।
জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থা ছাড়াও সেনাবাহিনী উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে। তবুও দুর্গম এলাকায় প্রবেশে সমস্যা হওয়ায় অনেক মানুষ এখনো সাহায্যের অপেক্ষায়।
স্থানীয় প্রশাসন আশঙ্কা করছে, উদ্ধার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান সরকার।