প্রকাশ: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৫
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলার ফলে নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৩০০ জনে। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য প্রকাশ করেছে। মন্ত্রণালয় জানায়, এই সংঘাতে অন্তত তিনজন ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা গেছেন, যা মানবিক সংকটকে আরও তীব্র করেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৯ জনের মরদেহ আনা হয়েছে। একই সময়ে আহত হয়েছে ৪২২ জন, যার ফলে হামলার শুরু থেকে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬২ হাজার ৫ জনে। এছাড়া বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপ ও রাস্তার নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা নিরাপদে সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা সরবরাহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ছয়জন নিহত হয়েছে এবং আরও ১৯০ জনের বেশি আহত হয়েছে। ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত মানবিক সহায়তা দেওয়ার সময় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৬২ জন এবং আহতের সংখ্যা ১৭ হাজার ৪৩৪ জনের বেশি।
অনাহার ও পুষ্টিহীনতার কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজন মারা গেছেন। অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অনাহারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭৬ জনে, যার মধ্যে ১৩৪ জন শিশু। এ তথ্য মানবিক সংকটের মাত্রা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ২৪ লাখের বেশি জনসংখ্যা ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় চরম দুর্ভিক্ষ তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা জরিপ ইতিমধ্যেই উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত করেছে এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে চলতি মাসের শেষ নাগাদ এটি আরও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়বে।
সাময়িক যুদ্ধবিরতির পর ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল আবার গাজায় হামলা শুরু করেছে। এর ফলে অন্তত ১১ হাজার ৭৬৮ জন নিহত এবং ৪৯ হাজার ৯৬৪ জন আহত হয়েছে। এই হামলার ফলে জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভেঙে গেছে।
এর আগে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজার যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একই সঙ্গে ইসরায়েল বর্তমানে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি রয়েছে।