প্রকাশ: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১১
আজ আরবি রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও ওফাতের পুণ্যময় দিন উদযাপন করা হচ্ছে। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করা তিনি ৬৩ বছর বয়সে একইদিনে ইন্তেকাল করেছেন।
মহানবীর জন্মের আগে গোটা আরব জাহেলিয়াতের অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। মানুষ আল্লাহর প্রতি অবহেলা করে নানা অনৈতিক ও হানাহানি কাজে লিপ্ত ছিল। অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার এই যুগে মহান আল্লাহ মানুষের মুক্তি ও আলোর পথ দেখানোর জন্য হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে প্রেরণ করেন।
ছোটবেলা থেকেই মহানবী আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত ছিলেন। তিনি প্রায়শই হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। ২৫ বছর বয়সে বিবি খাদিজার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন, যা মানবজাতির জন্য আল্লাহর নিদর্শন ও দিকনির্দেশনা হয়ে ওঠে।
ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সারাদেশে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দিনটি পালিত হচ্ছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেনের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বিস্তারিত কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পৃথক বাণী প্রদান করেছেন। সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। রাজধানীর প্রধান সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে কালিমা তাইয়্যেবা লেখা ব্যানার ও পতাকা সাজানো হয়েছে, যা উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করেছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ উপলক্ষে ১৫ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এই কর্মসূচির মূল কেন্দ্র। এতে কিরাত ও নাত প্রতিযোগিতা, কবিতা পাঠ, সাংস্কৃতিক আসর, আরবি খুতবা রচনা প্রতিযোগিতা, সেমিনার ও বিশেষ স্মারক প্রকাশ অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি ১২ রবিউল আউয়াল থেকে দুই সপ্তাহব্যাপী ইসলামী বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা ও দোয়ার মাধ্যমে মহানবীর জীবন ও শিক্ষার আলোকে তুলে ধরছে। শিশুদের জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমি নাত পাঠ, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
এছাড়াও সামরিক ও বেসামরিক হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা, শিশু নিবাস ও বৃদ্ধাশ্রমে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোও যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দিনটি পালন করবে। এ সব কর্মসূচির মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর শিক্ষা ও জীবন থেকে শান্তি, সহনশীলতা, ভ্রাতৃত্ব, মানবাধিকার ও নারী মর্যাদার বার্তা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।