প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:১৪
কাতারের রাজধানী দোহায় মঙ্গলবার বিকেলে ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় সময় বিকেলে আকাশে কালো ধোঁয়া দেখা যায় এবং দোহার বিভিন্ন অংশে ভয়ঙ্কর শব্দে আতঙ্ক ছড়ায়। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে এই হামলা চালিয়েছে। যদিও হামলায় কোন নির্দিষ্ট নেতা আক্রান্ত হয়েছে কি না তা জানানো হয়নি।
আইডিএফের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শিন বেত নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে যৌথ অভিযানে তারা হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছে। বহু বছর ধরে হামাসের শীর্ষ নেতারা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য দোহাকে কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। এই হামলা কাতারের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি স্বরূপ বলে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এক জ্যেষ্ঠ হামাস কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, তাদের আলোচক দলকে লক্ষ্য করে দোহায় হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলার ফলে নগরজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং কাতারের সাধারণ নাগরিকরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায়। মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক বিবৃতিতে বলেন, এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও বিধি লঙ্ঘন করেছে এবং কাতারের নাগরিক ও অধিবাসীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলেছে। তিনি আরও বলেন, কাতার এ ধরনের আক্রমণকে কঠোরভাবে নিন্দা জানায় এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হস্তক্ষেপকে বরদাশত করা হবে না।
আইডিএফ ও হামাসের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটেছে। ইসরাইল বারবার গাজা উপত্যকায় ও বাহ্যিক অঞ্চলে হামলা চালিয়ে থাকে, তবে দোহায় হামলা চালানো আন্তর্জাতিক নীতির দৃষ্টিকোণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
বিস্ফোরণ ও হামলার পর দোহায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কাতারের কর্মকর্তারা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তদন্ত শুরু করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য জরুরি ব্যবস্থা নিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই ধরনের হামলা কাতারের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করছে। কাতার সরকারের পক্ষ থেকে হুমকি দেয়া হয়েছে যে, তাদের নিরাপত্তা ও নাগরিকদের ক্ষতি হলে কেবল আঞ্চলিক নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই হামলার প্রেক্ষাপটে দোহায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ঘটনার প্রতি নজর রাখছে। কাতারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামলার সমস্ত তথ্য অনুসন্ধান শেষে প্রকাশ করা হবে এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।