সংস্কারের অভাবে বেহাল দশা রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরমজলিশপুর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীন রাস্তাটি। রাস্তাটি যেন ধান চাষের উপযোগী জমির রূপ নিয়েছে। দীর্ঘ দিনেও এ রাস্তা সংস্কার করা হয়নি।
ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই কাঁদা মাটিতে একাকার হয়ে যায় মাটির রাস্তাটি। এতে ভোগান্তিতে রয়েছে ওই এলাকার ১৫-২ হাজার মানুষ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক বর্ষণে খানাখন্দে পানি জমে প্রায় ডোবায় পরিণত হয়েছে যা প্রতিনিয়ত সৃষ্টি করছে জনদূর্ভোগ।
৩-৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই কাঁচা সড়কে বর্ষা মৌসুমে পুরো অংশজুড়ে কাদায় পরিপূর্ণ থাকে এই রাস্তাটি।
ফলে এই পথে চলাচল দুরূহ হয়ে পড়েছে। রাস্তাটিতে হামেদ মৃধার হাট দিয়ে চর মজলিশপুরে যেতে হয়। ওই এলাকায় চলাচলের জন্য একমাত্র মাধ্যম ঘোড়ার গাড়ি। তাছাড়াও একটি ব্রিজ না থাকার বর্ষার সময় পানির মধ্যে দিয়ে পথ পাড়ি দিতে হয় এলাকাবাসির।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, চলতি বর্ষা মৌসুমে কর্দমাক্ত রাস্তাটি দিয়ে এলাকাবাসীকে চলাচল করতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধজন, প্রসূতি নারী, অসুস্থ রোগী, ছাত্র-ছাত্রীর ষ্কুলে যাতায়াত ও মসজিদের মুসল্লিদের দূর্ভোগের যেন শেষ নেই।
এছাড়াও জয়নাল মৃধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৫০ জন শিক্ষার্থীদের প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ওই রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করতে অন্তহীন দূর্ভোগ পোহাতে হয়। করোনা ভাইরাসের কারণে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমেনি।
প্রাইভেট পড়তে যাওয়াসহ এলাকায় চলাফেরা করতে ওই রাস্তাটিই তাদের ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া ওই রাস্তা দিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাতায়াত সহ বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্য সামগ্রী কেনাকাটা করতে যেতে হয় এলাকাবাসীকে।
স্থানীয় চর মজলিসপুর, চরমহিদাপুর গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেন, মো.জলিল পাল, ফরিদ শেখ, মো. আজিজুল হক (মুদি দোকনদার), শিক্ষার্থী বিজলী খাতুন, আব্দুল আলিম ও জেরিন সহ বেশ কিছু সাধারণ জনগন জানান, শুকনো মৌসুমে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল ও ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করা হয় এ সড়কে।
অনেক কষ্টে এ রাস্তায় বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করে এলাকার মানুষ। বর্ষা শুরু হলে বন্ধ হয়ে যায় ওই সব বাহন। মানুষকে চলাচল করতে হয় পায়ে হেঁটে। সামান্য বৃষ্টি হলে কাঁদা মাটিতে একাকার হয়ে যাতায়াত অযোগ্য হয়ে পরে রাস্তাটি।
গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণের কারণে পুরো সড়কটি কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল এবং কিছু জায়গায় বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। প্রচণ্ড কাঁদায় চলতে গিয়ে অনেকেই পা পিছলে পড়ে গিয়ে গন্তব্যে যাবার আগেই বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হন।
ফলে মানুষকে জুতা খুলে পথ চলতে হয়। সড়কে কাঁদা থাকায় একমাত্র যানবাহন ঘোড়ার গাড়ি সেটিও চলতে পারে না। যদিও ঝুকি নিয়ে ঘোড়ার গাড়ি চলাচল করে কর্দমাক্ত জায়গায় ও গর্তে আটকে পড়ছে।
অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে সময় মতো নিতে না পারায় বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। এই কাঁচা সড়কটি উপজেলা উজানচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের শেষের দিকে অবস্থিত।
স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুল হক জানান, রাস্তাটির বেহাল দশার কারনে ২৫০ জন স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী, রোগী এবং জরুরি যাতায়াতে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
তিনি আরো বলেন , কয়েকবার লোকজন এসে রাস্তাটি মেপে গেছে, কিন্তু রাস্তাটি সংস্কার বা পাঁকা করনের কোন কাজ এ যাবত হতে দেখলাম না। একটি ব্রিজ ও রাস্তাটির উন্নয়ন বা সংস্কার হলে শিক্ষার্থী সহ সর্বস্তরের মানুষ চলাচলের পথ সুগম হবে।
এ ব্যাপারে উজানচরের স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হোসেন ফকির এর মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলে তার ফোনটি বন্ধ দেখায়।
উজানচরের ৯ নং ওয়ার্ড স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ কাদের শেখ এলাকাবাসীর দূর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ওই এলাকার লোকজনের চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়। সরকার বাজেট দিলে আমরা উন্নয়ন করবো।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।